সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন




মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের বিতর্কিতদের বাদের সিদ্ধান্ত যেকোনো সময়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৯

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হলো সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ নির্বাচন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের একটি চৌকস দল। বিভিন্ন সময়ে সাংগঠনিক পরীক্ষায় দলীয় সভাপতির কাছে উত্তীর্ণ এসব নেতাদের হাত দিয়ে এবার বেরিয়ে আসলো দুই বিতর্কিত ব্যক্তি।

ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈম এবং দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। দুই মহানগরীর দুই নতুন নেতাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে রয়েছে। কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই দুই বিতর্কিত ব্যক্তি নেতা হয়েছে তা অনুসন্ধানে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে একাধিক গোয়ন্দা সংস্থা।

উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর নাঈম এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জমি দখল থেকে শুরু করে ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করে রাখার অভিযোগ আছে।

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও মানববন্ধন সহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান এর পাশাপাশি রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন সেই প্রেক্ষাপটে নাঈম এর মত ব্যক্তি কে নেতা বানিয়ে শেখ হাসিনার রাজনীতিক শুদ্ধি অভিযান কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালো একটি গোষ্ঠী। অপরদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন বিতর্কিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালিদ ও মমিনুল হক সাঈদ এর পৃষ্ঠপোষকতায় একাধিক সরকারি ভবনে ঠিকাদারী নিয়ন্ত্রণ করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার সমিতির নেতা কামরুল হাসান রিপনের ক্যাসিনো সম্রাটদের সাথে সখ্যতা বিষয়টি এখন রাজনীতিতে ওপেন সিক্রেট।

এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের দায়ত্বশীল নেতারা বলছেন নাঈমের এত অপরাধ রয়েছে তা সম্মেলনের আগে তারা জানতেন না। তাই স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে শুদ্ধি অভিযান চলাকালীন সময়ে কোন প্রকারের যাচাই-বাছাই না করে কিভাবে নেতা নির্বাচন করা হলো। দলের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে শীগ্রই সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্নের মুখে পড়তে যাচ্ছেন। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জেনে ক্ষুব্দ হয়েছেন। যেকোনো সময় দলীয় সাধারণ সম্পাদক সহ দায়ত্বশীলদের কাছে এ বিষয়ে তিনি জবাব চাইলেন।

দলের একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক জানিয়েছেন, যেকোনো মুহূর্তে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিদেশ সফর সহ ব্যাস্ত সময় পার করছেন। ফলে ১৬ ই ডিসেম্বর এর স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনের পর মহানগরের নেতৃত্ব নির্বাচনে এত বড় ভুল কিভাবে হল তা খতিয়ে দেখতে একাধিক গোয়ন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তারা বলেন, বিতর্কিত ব্যক্তিদের কে নেতা বানানোয় সাধারণ মানুষের কাছে দলের ভাবমূর্তি পাশাপাশি দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান প্রশ্নের মুখে। একদিকে শুদ্ধি অভিযান অপরদিকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন সাধারণ মানুষ ভালোভাবে দেখছে না বলেও স্বীকার করেন তারা। সম্মেলনের দিন রাত থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিতর্কিত দুই নেতাকে নিয়ে লেখালেখি চলছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আরো বহুগুণ বেশি প্রচারিত হয়ে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এমন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় বিতর্কিত দুই নেতাকে সংগঠনের দায়ত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত অচিরেই নিলে সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষা পাবে বলে মনে করেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক নেতাকর্মী বলেন, যারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এবং ভূমি দখলবাজ তাদের সাথে সাধারণ কর্মীরা মিলেমিশে কাজ করতে পারবে না। এদেরকে ঘিরেই অতীতের মতোই একটি শক্তিশালী চাঁদাবাজ এবং দখলবাজ বাহিনী তৈরি হবে। তাই এই বিষবৃক্ষকে শুরুতেই ধ্বংস করে দিতে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান সাধারণ নেতাকর্মীদের।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765