ভোটযুদ্ধের আগেই রংপুরজুড়ে মুখে মুখে নির্বাচনের ফল আগাম জানা গিয়েছিল। যাঁকেই জিজ্ঞেস করা গেছে, তাঁর মুখেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদের জয়ধ্বনি শোনা গেছে। ভোটযুদ্ধ শেষে গতকাল শনিবার রংপুর-৩ আসনের (সদর) ভোটাররা সাদকেই জয়ী করেছে। দীর্ঘ ২৮ বছর দখলে রাখা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই আসনের উপনির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে ছিল না কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগণ্য।
রংপুর সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশনের ২৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসনের ১৭৫টি কেন্দ্রে গতকাল ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫৮ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সমর্থনপুষ্ট জাতীয় পার্টির প্রার্থী এরশাদপুত্র রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৪৭ ভোট।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাদ এরশাদকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করে গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় রিটার্নিং অফিসার ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন জানান, উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
জাতীয় পার্টি ও বিএনপির প্রার্থী ছাড়া উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, এনপিপির শফিউল আলম, গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ বায়েজিদ ও খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
লাঙলের জয় নিশ্চিত হয়ে সাদ বলেন, ‘রংপুরবাসী আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। রংপুরে জাতীয় পার্টির দুর্গ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার দেওয়া কথা অনুযায়ী বাবার (এরশাদ) অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে পিছিয়ে পড়া রংপুরকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’ পৈতৃক নিবাস পল্লীনিবাসে রাত পৌনে ৮টায় কর্মী-সমর্থকরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন। তখন ওই প্রতিক্রিয়া জানান সাদ।
এদিকে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া গতকালের উপনির্বাচন নিরুত্তাপ ভোটের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি একেবারে কম হওয়ায় নির্বাচনী কর্মকর্তারা অলস সময় পার করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য আগেই বলেছিলেন, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ভোটার ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে।