বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন




২৩ বছর পর নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে ক্রিকেট

নতুনবার্তা ডেস্ক
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৯

অপেক্ষা আসলে কত বছরের? ইংল্যান্ডের সমর্থক বলবেন ২৭ বছরের। সেই কবে ১৯৯২ সালে সর্বশেষ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছিল তারা, এরপর আর ওমুখো হয়নি। আজ অস্ট্রেলিয়াকে দুমড়েমুচড়ে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইংল্যান্ড সত্যিকারের ফেবারিটের মতো ফাইনালে উঠে এল। ঠিক ২৭ বছর পর।

ওদিকে নিরপেক্ষ দর্শকের কাছে অপেক্ষাটা ২৩ বছরের। ১৯৯৬ বিশ্বকাপেই সর্বশেষ নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন পেয়েছিল ক্রিকেট। সবাইকে চমকে দিয়ে শ্রীলঙ্কা শিরোপা নিয়ে উৎসব করেছিল। এরপর আর নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাই জাগেনি বহুদিন। প্রতিবারই যে ফাইনাল খেলছিল অন্তত একবার হলেও বিশ্বকাপ জেতা দলগুলো। নতুন কোনো দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ এসেছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডকে সে ফাইনালে হেসেখেলে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

সেই অস্ট্রেলিয়াকেই আজ ইংল্যান্ড হেসেখেলে হারাল। জেসন রয় আম্পায়ারের অবিশ্বাস্য ভুল সিদ্ধান্তের শিকার না হলে ম্যাচটা ৩৩তম ওভার নয়, আরও অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসে ভয়ংকর মনে হয়েছিল এজবাস্টনের উইকেটকে। ১৪ রানে ধসে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার। স্টিভ স্মিথের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাতেও অলআউট হওয়া আটকায়নি, এক ওভার হাতে রেখে ২২৩ রানে থেমেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম সেমিফাইনালে ২৩৯ রান করেও ১৮ রানের জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সবচেয়ে কম রান করেও জয়ের রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ার। ২০৭ রানের চেয়ে তো ১৬ রান বেশিই করেছে আজ।

সে আলোচনা থেমে যেতে খুব বেশি দেরি হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার মূল অস্ত্র মিচেল স্টার্কের প্রথম ৩ ওভারেই ২৩ রান তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড বুঝিয়ে দিয়েছে আজ অন্তত অস্ট্রেলিয়াকে দাপট দেখাতে দেবে না, অন্যদিকে বেরেনডর্ফের বলে তাই খুব একটা রান তুলতে হয়নি তাদের। কামিন্স এসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটু রাশ টানলেন তবু প্রথম পাওয়ার প্লেতেই পঞ্চাশ পেয়ে গেল ইংল্যান্ড। জেসন রয় চোট থেকে ফেরার পর ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি আবারও ভয়ংকর রূপ ফিরে পেয়েছে। আজ তাদের সেরা রূপটাই দেখল অস্ট্রেলিয়া।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর রয়ের ব্যাটে উঠল ঝড়। দলকে পরের ৫০ এনে দিতে মাত্র ৩৩ বল দরকার হলো রয় ও বেয়ারস্টোর। এর আগেই নিজের ৫০ পেয়ে গেছেন রয়। তবে রয়ের আসল মূর্তি টের পেয়েছেন স্মিথ। মূল বোলারদের কারও ভাগ্যে উইকেট নেই দেখে সাবেক অধিনায়ককে ডেকে এনেছিলেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। সে পরীক্ষা–নিরীক্ষার ফল হলো ভয়াবহ, এল ২১ রান। এর মাঝে টানা তিনটি ছকা মেরেছেন রয়, যার মধ্যে শেষেরটি গ্যালারির চতুর্থ তলায় আশ্রয় নিয়েছিল।

এরপরই আবার স্টার্ককে ডেকে পাঠিয়েছেন ফিঞ্চ। স্টার্কও তার প্রতিদান দিয়ে তুলে নিয়েছেন বেয়ারস্টোকে। গ্লেন ম্যাকগ্রাকে টপকে এক বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড এখন মিচেল স্টার্কের (২৭)। তবে স্টার্ককে সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ করতে দেননি বেয়ারস্টো। ১২৪ রানের জুটি গড়েও সন্তুষ্ট না হওয়ায় বেয়ারস্টো (৩৪) রিভিউ নিলেন। নষ্ট হলো সে রিভিউ। একটু পরেই বেয়ারস্টোর সে সিদ্ধান্ত মহা ভুলে রূপ নিল। যখন কামিন্সের বলে কুমার ধর্মসেনা রয়কে কট বিহাইন্ড দিলেন। রিভিউ শেষ হয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে থেকে ওয়াইড বলে তর্ক করলেন রয়। কিন্তু কোনো কাজ হলো না তাতে। পরে রিপ্লে দেখে রয়ের হতাশা ক্ষোভে রূপ নিয়েছে। ৬৫ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৫ রান করে থেমেছেন রয়। ইংল্যান্ডের রান তখন ১৪৭, ইনিংসের বয়স ২০ ওভার হয়নি তখনো। ১৮২ বলে ৭৭ রান তখনো দরকার ইংল্যান্ডের।

জো রুট (৪৯) ও এউইন মরগান (৪৫) সেই লক্ষ্যটা ছুঁয়েছেন ৭৫ বলে। ২৭ বছরের অপেক্ষা ফুরোতে তাঁদের যেন দেরি সইছিল না। দুজনেই মেরেছেন ৮টি করে চার। শুধু বেরেনডর্ফের বলে বাতাসে একবার বল ওঠা ছাড়া আর কোনো খুঁত নেই দুজনের জুটিতে। ওতেই ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর আবার ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড। তাতে আরও একতি ব্যাপার নিশ্চিত হলো, অবশেষে ৪৪ বছরে এসে ক্রিকেট তাঁর ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়নের দেখা পাচ্ছে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765