বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন




শরীয়তপুরের হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট !

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০

শরীয়তপুর জেলার ৫ টি উপজেলা স্বস্থ্যকমপ্লেক্স ও শরীয়তপুর শহওে আধুনিক হাসপাতাল রয়েছে। এ সব হাসপাতাল গুলোতে রয়েছে চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট। ভেন্টিলেটর তো থাকার প্রশ্নই উঠেনা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুলোতে এক্স-রে মেশিন ও নেই আর থাকলে ও অনেকাংশেই বিকল। বিশ্ব মহামারী মরনব্যাধি করোনা পরিস্থিতিতে এই চিকিৎসা সামগ্রী সংকট বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে চিকিৎসকদের মধ্যে আশংকা দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের পরিবহনের জন্য তিনটি বিশেষ এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করার নির্দেশ থাকলেও শরীয়তপুর স্বাস্থ্য বিভাগ একটি এ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখতে পারেনি। মোটর সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। সিভিল সার্জন বলছেন এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানাযায়, এ পর্যন্ত জেলায় ৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩ জন ,জাজিরা উপজেলায় ৩ জন ,ডামুড্যা উপজেলায় ১জন । ইতোপূর্বে নড়িয়া উপজেলায় একজন রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। এখন পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলায় ১০৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৮০ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। ৮ জন আক্রান্ত হয়ে আর কিছু রির্পোট এখন ও বাকী রয়েছে।

শরীয়তপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে রোগীদের অক্সিজেন দেওয়ার সিলিন্ডার থাকলেও ফ্লুমিটার , এক্সরে মেশিন,ইসিজি,আল্টাসোনোগ্রাম,নেবুলাইজার মেশিন এর তীব্র সংকট রয়েছে। জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ১২টি সিলিন্ডার থাকলেও ঐ গুলো ব্যবহারের জন্য ফ্লু-মিটার রয়েছে মাত্র ৪ টি । যার ফলে একসাথে ৪ জন রোগীকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব। নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ২টি । কোন এক্স-রে ,আল্টানোনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন নেই। বাইওে দেখে রোগীদেও সেবা সহায়তা নিতে হয়। ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ১২ টি সিলিন্ডার থাকলেও ঐ গুলো ব্যাহারের ফ্লু-মিটার রয়েছে মাত্র ৩ টি । যার ফলে এক সাথে মাত্র ৩ জন রোগীকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব। নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ২টি । কোন এক্স-রে ,আল্টানোনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন নেই। গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ১৫ টি সিলিন্ডার থাকলেও ঐ গুলো ব্যবহারের ফ্ল-মিটার রয়েছে মাত্র ৩ টি । যার ফলে এক সাথে ৩ জরোগীর বেশী অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব না। নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ২টি। কোন এক্স-রে ,আল্টানোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন নেই। ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য য কমপ্লেক্স এ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ১২ টি সিলিন্ডার থাকলেও ঐ গুলো ব্যবহারের জন্য ফ্লু-মিটার রয়েছে ২ টি । যার ফলে এক সাথে ২ জন রোগীর বেশী অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব না।

নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ৩টি । কোন এক্স -রে ,আল্টানোনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন নেই। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স এ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ৮ টি সিলিন্ডার রয়েছে ঐ গুলো ব্যাহারের ফ্লু-মিটার রয়েছে ৪ টি । যার ফলে এক সাথে ৪ জন রোগীকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব। নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ২টি। কোন এক্স-রে ,আল্টানোনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন নেই।শরীয়তপুর সদর ১০০শয্যার আধুনিক হাসপাতালে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ৬০ টি সিলিন্ডার রয়েছে ঐ গুলো ব্যাহারের ফ্লুু-মিটার রয়েছে মাত্র ৮ টি । যার ফলে এক সাথে ৮ জনের বেশী রোগীকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়া সম্ভব না। নেবুলাইজার মেশিন রয়েছে ৮টি।এক্স-রে, ইসিজি মেশিন থাকলেও দীর্ঘ্যদিন যাবৎ নষ্ট রয়েছে। আল্টাসোনোগ্রাম মেশিন থাকলেও কোন টেকনেশিয়ান নেই। গত ৯ এপ্রিল বুক ব্যাথা ,শ্বাস-কষ্ট ও পা ফুলা নিয়ে একজন রোগী শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ঐ রোগীর ইসিজি ও আল্টাসোনোগ্রাম করোনার ভয়ে বাইরের কোন ক্লিনিকে ও করানো সম্ভব হয়নি ।পরদিন আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ১৫ এপ্রিল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যাক্তি কে জাজিরা থেকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঐ রোগী কে পরিবহনের জন্য শরীয়তপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ কোন এ্যাম্বুলেন্স ছিল না। হতদরিদ্র এ রোগীর স্বজনরা ১২ হাজার টাকায় বেসরকারী এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় নিয়ে যায়।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুস সোবহান বলেন, আমাদের জন্য কোন গাড়ি বরাদ্ধ নেই। মোটর সাইকেলে দুরদুরান্তে নমূনা সংগ্রহ করতে যেতে হয়। আমাদের কষ্টের কথা কেউ শোনে না।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডাঃ মুনির আহম্মেদ খান বলেন , আমরা নানা সংকটের মধ্যেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এবং এ সংকট নিরশনে স্বাস্থ্য অদিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। এখনো কোন বরাদ্ধ পাইনি।

শরীয়তপুরের সিভিল সাজর্ন ডাঃ এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে একটি গাড়ী পেয়েছি যা দিয়ে আমরা পুরো জেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করছি।অন্যান্য যন্ত্রপাতির জন্য কতৃপক্ষের নিকট চিঠি দিয়েছি। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে সংকট নিরসন হবে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765