শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন




বাগেরহাটে এলাকাবাসির প্রতিবাদের মুখে বিদ্যালয় ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ

বাগেরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০

বাগেরহাটে এলাকাবাসির তীব্র প্রতিবাদের মুখে অবশেষে কে.বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় চার মাস পানির মধ্যে রডের স্ট্রাকসার তৈরি করে রাখার পর রোববার সকালে হঠাৎ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে ঠিকাদার। এসময় বাগেহোট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা ঢালাইয়ের স্থলে ছিলেন না। চার মাস পানির মধ্যে থাকায় ব্যবহার অনুপোযোগী ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় ভবনের ঢালাই কাজ হতে দেখে এলাকাবাসি তীব্র প্রতিবাদ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।

এদিকে ১৮ মাস মেয়াদে কার্যাদেশ প্রদানের ১ বছর ২ মাস অতিবাহিত হলেও ভবনটি নির্মানে দৃশ্যমান তেমন কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসি।
বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কে. বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মানের ২ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ভবন নির্মানের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস কাজী এন্টাইপ্রাইজকে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। যার মেয়াদ দেয়া হয়েছে ১৮ মাস।

স্থানীয়রা জানান, রোববার সকালে হঠাৎ বিদ্যালয় ভবনের নির্মান কাজ শুরু করে কয়েকজন শ্রমিক। এসময় কোন প্রকৌশলী বা অফিসের কোন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। এমন অব্যবস্থাপনা দেখে এলাকাবাসি জড় হয়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে। এক পর্যায়ে জিল্লুর রহমান নামে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে এসে কোন সমস্যা নেই বলে কাজ করতে নির্দেশ দেন। এতে এলাকাবাসি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

স্থানীয় মীনা ফারুক বাবু বলেন, এই বিদ্যালয়টি আমাদের প্রাণের স্পন্দন। গত চার মাস আগে এখানে রড বেঁধে রেখে গেছে। পানির ভিতর লোহার রড থাকায় তা ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক দফায় স্থানীয়রা কাজ শুরুর জন্য যোগাযোগ করলেও তাতে কেউ কর্ণপাত করেনি। ৪তলা এই ভবনটি এভাবে নির্মান হবে এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই আমরা কাজ বন্ধ করে দেয়ার চেস্টা করেছি।

স্থানীয় আলম গাজী ও শেখ আঃ আজিজ জানান, অনেক চেস্টা তদবিরের পর বিদ্যালয়ের ভবনটি সরকার বরাদ্ধ দিয়েছে। এলাকাবাসি ভবন নির্মানের জন্য জমিও দান করেছে। কিন্তু সংলিষ্ট কতৃপক্ষে তদারকির অভাবে এলাকাবাসির ¯^প্নভঙ্গ হতে চলেছে। এভাবে বিদ্যালয় ভবন নির্মান হতে দেয়া হবে না।
বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ জহিরুল ইসলাম মিঠু বলেন, কে বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের দাবী দির্ঘদিনের। বাগেরহাট -২ আসনের সংসদ সদস্যে শেখ তন্ময়ের সহযোগীতায় ৪ তলা এই ভবনটি বরাদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘদিন পানির নিচে রড ফেলে রাখায় তা ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। রোববার সকালে এক প্রকার অতিগোপনে নস্ট রডের উপরই ঢালাই কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এলাকাবসি এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা প্রতিবাদ করেছে। একজন প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে এসে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন। এতে এলাকাবাসি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে মোবাইলে বিষয়টি জানালে তিনি কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিভা সরকার জানান, কে. বি ফতেপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মানের ২ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্ধ দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস কাজী এন্টাইপ্রাইজকে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল ১৮ মাস কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। রোববার সকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মানের জন্য ঢালাই কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করে। এরফলে কাজটি সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে ১৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর কত ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা তো দেখাই যাচ্ছে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765