দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার আয় যেমন বেড়েছে তেমনি কর্মচাঞ্চল্যতাও বেড়েছে কয়েকগুন। প্রায় দুই দশকের বৈরিতা কাটিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলার সক্ষমতা বাড়ছে। জাহাজ আগমন নির্গমন সংখ্যাও বাড়ছে। বেড়েছে বন্দরের আয়ও। সর্বশেষ ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে নীট মুনাফা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের দাবী, ২০০৯ সাল থেকে বন্দরে গতি আসতে শুরু করেছে। আর এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত গতিতে বাড়ছে। বন্দরের প্রধান সমস্যা নদীর নাব্যতা সংকটে ১০৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে পশুর চ্যানেলে খনন কাজ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ২০১৯- ২০১২০ অর্থবছরে ৬৫১ কোটি টাকা ব্যায়ে বন্দর চ্যানেলে পলি অপসারনের কাজ শুরু হয়েছে। মোংলা বন্দরে অত্যাধুনিক মোবাইল ক্রেনের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বন্দরের উন্নয়নে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি। এই কারনে জাহাজ আগমনের সংখ্যাও বেশ বেড়েছে। বন্দরের অর্থ ও হিসাব শাখার তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য নিয়ে বিদেশী জাহাজ এসেছে ৯ ১২টি যা গত অর্থ বছরের ৭৮৪ টি থেকে ১২৮টি বেশী। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে পণ্য উঠানো নামানো বেড়ে ১ কোটি ২ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। বন্দরের আধুনিকায়ন ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের অংশ হিসেবে গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় জার্মান থেকে সদ্য আমদানি কৃত অত্যাধুনিক ক্রেন দিয়ে বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে অব¯’ানরত বিদেশী কন্টেইনারবাহী এমভি কোটা রিয়া বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস-বোঝাইয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আমদানি করা এ ক্রেনটি ৬৪ টি চাকাযুক্ত ও ৮৪ মেট্রিকটন উত্তোলন ক্ষমতা সম্পন্ন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক ও তড়িৎ) মাহবুবুর রহমান মিনা জানান, পোর্ট জেটির কাজে ব্যবহৃত নতুন এ ক্রেনটি বিদ্যমান জেটির লোড সহনশীলতার সীমার মধ্যে ৫ থেকে ৯ নম্বর জেটি বরাবর চলাচল করতে পারবে। অত্যাধুনিক মোবাইল ক্রেন দিয়ে স্প্রেডার, গ্রাব ও হুক অপারেশন চাহিদানুসারে ব্যবহার করা যাবে।
বন্দরের এ কর্মকর্তা আরো জানান, নতুন যুক্ত হওয়া ক্রেনের বুমটি ৪৮ মিটার দীর্ঘ হওয়ায় খুব সহজে কন্টেইনারবাহী গিয়ারলেস জাহাজ হতে কনেন্টইনার বোঝাই ও খালাস অতিদ্রুত করা যাবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালে মাওয়ায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন আর রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনকে সামনে রেখে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ৪৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক আরো ৭৫টি ইকুপমেন্ট (বন্দরে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি) সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে।
,আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে দেশের ব্যবসায়ীদের চাহিদা পুরণ করতে দিন দিন সক্ষমতা বাড়িয়ে যা”েছ মোংলা বন্দর। আর এর ফলে দেশের রাজস্ব আয়ে যোগান দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে মোংলা সমুদ্র বন্দর।