মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন




ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে পুলিশের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ক্যাসিনোসহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর যুবলীগের দুই নেতা- খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীম, কৃষক লীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান হোসেনসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

এসব অভিযানে নগদ ১৭ কোটি টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) এবং ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০১ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়েছে।

রিমান্ডে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং একাধিক সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার মূলহোতা ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। এছাড়া ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে পুলিশের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত বলে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন খালেদ ও শামীম।

এমন পরিস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের দায়ের করা মামলার তদন্ত করতে বিব্রতবোধ করছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের ওসিদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন কমিশনার। শিগগিরই ওসিদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলমান অভিযান নিয়ে ‘জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণু)’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কঠোর মনোভাব পোষণ করেছেন, এখানে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী এবং অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অত্যন্ত কঠোর।

এমন পরিস্থিতিতে ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রোববার বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ভোলার এমপি এবং যুবলীগের উপদেষ্টা নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ নেতা এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। এর আগে গ্রেফতার দুই যুবলীগ নেতা খালেদ এবং জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।

ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে জড়িত নেপালিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এদিকে গণপূর্ত অধিদফতরে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। গণপূর্ত বিভাগের প্রভাবশালী ঠিকাদার শামীমকে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ গ্রেফতারের পর তিনি র‌্যাব-পুলিশকে অনেক তথ্য দিয়েছেন।

গত ১০ বছর ধরে তিনি কীভাবে গণপূর্তে এত দাপটের সঙ্গে সব টেন্ডার বাগিয়ে নিতেন, এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, জি কে শামীম নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি তিনি গণপূর্তের প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতেন।

সাবেক দুই প্রকৌশলীকে তিনি মোটা অঙ্কের ঘুষও দিয়েছেন। তারা হলেন গণপূর্ত বিভাগের সদ্য সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এবং ঢাকা জোনের সাবেক অতিরিক্ত প্রকৌশলী আবদুল হাই।

গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, যে প্রক্রিয়ায় শামীম ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে, সেটি নিয়মের অধীনে ছিল নাকি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করা হয়েছিল- সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশে ক্যাসিনো চলার সঙ্গে প্রশাসনের কেউ না কেউ জড়িত থাকতে পারে। এজন্য প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765