শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন




নতুন চ্যাম্পিয়ন বরণে প্রস্তুত লর্ডস

নতুনবার্তা ডেস্ক
  • প্রকাশ: শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯

এক ভাই ক্রিকেটের ভক্ত, আরেকজন টেনিসের। রাজবাড়ির দুই মুখ, নিয়ম করে তাদের সবখানেই যেতে হয়। কিন্তু সমস্যাটা হয়েছে কাল রোববার দু’জনই নাকি আসতে চাচ্ছেন লর্ডসে, উইম্বলডনের ফাইনাল দেখতে অলইন্ডিয়ান লনটেনিস কোর্টে নাকি এবার যেতে চাচ্ছেন না প্রিন্স উইলিয়াম। প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে সপরিবারে তিনিও লর্ডসে বসে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ফাইনাল দেখতে চান। গতকাল লর্ডসের বাগানে এ গল্পটিই চালু ছিল। এমনিতে আভিজাত্য আর ঐতিহ্য মিলিয়ে একটি রাজকীয় ব্যাপার আছে লর্ডসের। ক্রিকেটের আদি বাড়ি, সেখানেই কাল বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটের জন্য নামছেন ভূমিপুত্ররা- শেষবেলার হাতের কাজ সব গুছিয়ে নিতে নিতেই যেন একটা খুশি-খুশি ভাব লর্ডসের চারদিকে।

ফাইনালের যেসব টিকিট ভারতীয়রা কিনে রেখেছিলেন, এখন তাদের কাছ থেকে সেগুলোই চড়া দামে কিনছেন ব্রিটিশরা। অনলাইনে টিকিট কেনার বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। সেন্ট্রাল লন্ডনের পাবগুলোতে ‘ক্রিকেট রিটার্ন হোম…’ লিখে এরই মধ্যে প্রিন্ট করে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্যাবলয়েডগুলোতে এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খবর প্রথম পাতায় এসেছে। আলাদা খবরে জানানো হচ্ছে, সুপার সানডেতে লর্ডসে কোন কোন তারকা থাকবেন। ইংলিশ ফুটবলের তারকারাও নাকি হাজির থাকতে পারেন সেদিন মরগানদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য। গত দেড় মাস ধরে চলা বিশ্বকাপে ক্রিকেট নিয়ে লন্ডনকে এতটা আবেগী হতে দেখা যায়নি।

সেদিন অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ড্রেসিংরুমেও নাকি শ্যাম্পেইনের ছিপি খোলা হয়েছে। যদিও ইংলিশ কোচ ট্রেভর বেলিস খুব করে চাইছেন, আর কয়েক ঘণ্টার জন্য এই আবেগটা চাপা থাকুক। ‘আমরা জানি বাইরে কী হচ্ছে। আমাদের ফাইনালে ওঠায় সমর্থকরা কতটা খুশি হয়েছে। তবে আর একটি ম্যাচ বাকি, আমি অনুরোধ করব, কয়েক ঘণ্টার জন্য অপেক্ষা করুন।’ মরগান নিজেও এসে বলেছেন, আগামী রোববারকে তারা স্মরণীয় করে রাখতে চান। ‘আমরা লর্ডসের মাঠে ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়েছি। এটা আমার জন্য আমাদের দলের জন্য অনেক সম্মানের ব্যাপার। এটা আমরা অর্জন করেছি। চেষ্টা করব আগামী রোববারও এমন কিছু করতে, যা স্মরণীয় হয়ে থাকে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে।’ এর আগে সেই ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনালে লর্ডসে খেলেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু সেদিন ইংলিশ অধিনায়ক মাইক বেয়ারলি নন, কাপ উঠিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। সেগুলো মরগানদের কাছে শুধুই সাদাকালো ছবি, এমনকি ১৯৯২ সালে মেলবোর্নে যখন ইমরান খানের কাছে গ্রাহাম গুচের ইংল্যান্ড হেরে যায়, তখন হয়তো আজকের জো রুটদের বয়স তিন কি চার!

অতীতে তিন-তিনবার ফেভারিট তকমা নিয়েও যে ট্রফি স্পর্শ করতে পারেনি ইংলিশরা, এবার সেটাই করার খুব কাছাকাছি তারা এবং সেটা আবার ‘হোম অব ক্রিকেটে’! কালকের এই ফাইনাল ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে দারুণ এক রোমাঞ্চ কাজ করছে। অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে ক্রিস ওকস, আর্চাররা নাস্তানাবুদ করেছেন, তা দেখার পর কেউ ভাবতেই চাইছে না ট্রফি কিউইদের হাতে উঠবে! গতকালই বার্মিংহাম থেকে লন্ডন পৌঁছেছেন মরগানরা। হোটেল থেকে আর লর্ডসের দিকে আসেননি। তবে নিউজিল্যান্ড দল কিন্তু এসেছিল লর্ডসে, সকাল থেকেই অনুশীলন করে যায় তারা। ভারতকে হারানোর টাটকা একটা আত্মবিশ্বাস তাদের চাঙ্গা রেখেছে। ফাইনালে স্বাগতিকদের সঙ্গে লড়তে হবে, গ্যালারি থেকে কটু কথা শুনতে হবে- সব মেনেও কিউইরা দৃঢ় আছে। গতবার বিশ্বকাপের ফাইনালেও তারা অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠেই খেলেছিল, সেই ম্যাচে প্রত্যাশার ধারেকাছেও খেলতে পারেনি কিউইরা- মনে আছে, ম্যাচের পর অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম বলেছিলেন, ‘ফাইনাল খেলাটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার, চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাও। আমরা হয়তো এবার পারিনি, তবে মেলর্বোনের এই ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আগামীতে ছেলেরা অবশ্যই কাজে লাগাতে শিখবে।’ মেলবোর্নের পর লর্ডস- ম্যাককুলাম এখন সুট-টাই পরা ধারাভাষ্যকার, তবে আগেরবারের ফাইনাল খেলা অনেকেই আছেন নিউজিল্যান্ডের এই দলে। সুতরাং কালকের ফাইনালে ব্রিটিশ সিংহরা ফেভারিট হলেও কিউইরা কিন্তু সুযোগ বুঝে ঠিকই চাপে ফেলতে পারবে তাদের। দুটি সেমিফাইনাল দেখার পর কেউ কেউ বলছেন যে, ফাইনাল হবে দুই দলের পেসারদের মধ্যেই! আর কে না জানে, লর্ডসের আদি ভিটে তো সেই গতির লড়াই দেখতেই বেশি ভালোবাসে। লর্ডসের নতুন পিচের ফাইনালে তাই জমজমাট একটি রোববারের অপেক্ষায় এখন লন্ডন।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765