শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৮ অপরাহ্ন




চার হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করলেন বাবা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৯

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে বাবা তার চারদিন বয়সে একটি শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার একদিন পর পুলিশে শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার টাঙ্গালিয়া পাড়ার মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রী রোকসানা খাতুনকে ভুল বুঝিয়ে চারদিনের সন্তান চার হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। বুকের ধনকে হারিয়ে অসহায় মা রোকসানা খাতুন থানায় অভিযোগ করলে পুলিশে তার সন্তানকে শনিবার বিকেলে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তার স্বামী মাহবুবুর রহমান। তিনি লোক মারফত তার স্ত্রীর কাছে তালাক দেয়ার খবর পাঠিয়ে দেন। হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোকে (স্ত্রী) আর আমি নিব না। দ্রুতই তালাকের কাগজ পেয়ে যাবি।’

তারা আরও জানায়, মাহবুবুর রহমান প্রথম স্ত্রী থাকার পরও দ্বিতীয় বিয়ে করে। তার জমিজমা সম্পদ বলতে কিছুই নেই।

শিশুটির মা রোকসানা খাতুন জানান, রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী এলাকার আকবর হোসেন নামের এক নিঃসন্তান দম্পতি চার হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। এ অবস্থায় ভয়ে ওই দম্পতি শিশুটিকে রাজীবপুর থানায় পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমার বিয়ে হয়েছে এক বছরের বেশি সময় আগে। বুধবার আমার প্রথম সন্তান জন্ম নেয়। তার নাম রেখেছি ইসমাইল হোসেন। শুক্রবার আমার স্বামী বাবার বাড়িতে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে আমাকে বলে প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশুকে সরকার ভাতা দেয়। তাতে নাম লেখাতে হবে কইয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সকাল পার হইয়া দুপুর হয় কিন্তু আমার সন্তানকে নিয়া বাড়িতে আইসে না। সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে আইসা কয় সন্তানকে বেইচা দিছি। এ অবস্থায় আমি কান্নাকাটি করে আমার বাবার বাড়িতে আসি।’

জানা গেছে, রোকসানা খাতুন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। একই উপজেলার কাচারিপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি। তার বাবা মোজাম্মেল হক অনেক আগেই মারা গেছে। এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। মাহবুবুর রহমানের পরিবারও খুবই গরীব। সে ভ্যান গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। রোকসানা খাতুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ঘটনার পর মাহবুবুর রহমান আত্মগোপন করে।

এ প্রসঙ্গে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, শিশুটির মা রোকসানা খাতুন আমাদের কাছে এসে বলার পরই আমরা শিশুটি বিক্রি করার মধ্যস্থতাকারি ফুল চানকে ধরে নিয়ে আসি। এরপর তার দেয়া তথ্য মতে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765