মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন




বাগেরহাটে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা : দুই বৃদ্ধা নারীসহ আহত-৩

বাগেরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

বাগেরহাটের কচুয়ায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে মেহেদী হাসান বাবুর নেতৃত্বে ভোর রাতে একটি বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় সন্তান ও জামাইয়ের জীবন বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রসীদের বেধড়ক পিটুনিতে দুই বৃদ্ধা নারীসহ ৩ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ওই দুই নারী বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনার সময় জীবন বাঁচাতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে হওয়ায় পুলিশের কাছ থেকে কোন প্রকার সহায়তা পাননি বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন। আহতরা হলেন, রাঢ়ীপাড়া এলাকার ডাকুয়া জাহিদুল ইসলাম (৩৮), তার মা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রহিমা বেগম (৬০) ও জাহিদুলের শাশুড়ি নাহার বেগম (৫০)।

 

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাঢ়ীপাড়া গ্রামে জাহিদুল ডাকুয়ার বাসায় সেহেরী খাচ্ছিলেন। এসময় কচুয়ায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ড্রাইভার তাকে ডাকতে থাকে। তিনি দরজা না খোলায় কিছু সময়ের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে মেহেদী হাসান বাবু ১৫/২০ জন লোক নিয়ে এসে কুড়াল দিয়ে দরজা কেটে ছিটকেনি খুলে ঘরে প্রবেশ করে, জাহিদুলকে মারপিট শুরু করে। এসময় তার শাশুড়ি নাহার বেগম এগিয়ে গেলে তাকে পিটিয়ে জখম করে। মোবাইলে খবর পেয়ে সন্তানের জীবন বাঁচাতে ছুটে আসেন জাহিদুলের মা রহিমা বেগম। তাকেও মেহেদী হাসান বাবু বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে।

পরে তাদের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে জাহিদুল উলঙ্গ অবস্থায় ছুটে পালান। এসময় তার ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়।
জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিনি জীবন বাঁচাতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু কচুয়া থানা পুলিশ অনেক পরে ঘটনাস্থলে আসে। তাও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলের সাথে কথা বলে। তিনি জীবনের নিরাপত্তার এলাকা ছেড়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান।

জাহিদুলের মা ১৯৭১ সালে রাজাকারদের হাতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলীর মেয়ে রহিমা বেগম বলেন, ‘সেহেরী খাওয়ার জন্য সামনে ভাত নিয়ে বসছিলাম। এমন সময় জাহিদুল ফোন করে বলে, মা আমাকে বাঁচাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলতে এসেছে। তখন ভাতের থালা ঠেলে রেখে, ছেলের জীবন বাঁচাতে পাড়া পড়সিদের ডেকে নিয়ে ছুটে যাই। কিন্তু সেখানে পৌছালে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে বাবু আমার ভাসুরের ছেলেকে পারপিট করে। এসময় ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজে ছুটে যাই। তখন বাবু নিজে আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরও জোরে জোরে মারতে থাকে। কেউ আমাকে রক্ষা করতে আসতে পারেনি। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সঠিক বিচার দাবী করছি।
জাহিদুলের শাশুড়ি নাহার বেগম বলেন, ডাক্তার দেখানোর জন্য জামাই বাড়ি আসছিলাম। রাতে সেহেরী খাওয়ার সময় দরজা কেটে ঘরে ঢুকে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে আমার জামাইকে মারতে লাগে। সে উলংঙ্গ হয়ে গেলে আমি দৌড়ে তাকে বাঁচাতে যাই। এসময় তারা আমাকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে ফেলে রাখে।’

এবিষয়ে মেহেদী হাসান বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মিন্টু নামে একজন সন্ত্রাসী আমাদের এলাকায় আত্মগোপন করে আছে তাকে খুুঁজে বের করার জন্য এক যুবলীগ নেতা আমাকে নির্দেশ দিলে আমি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশদের সাথে নিয়ে সারা রাত ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাসী করি। এরই ধারাবাহিকতায় তার বাসার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করলে সে দরজা খোলেনি। পরে গ্রামপুলিশরা কুড়াল দিয়ে দরজা কাটলে সে এবং তার সাথে আরো ৩ জন পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। এখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। এটা সম্পূর্ন নাটক।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মো: শাফিন মাহমুদ বলেন, থানায় অভিযোগ দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765