বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১১ অপরাহ্ন




পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯

হঠাৎ প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ টাকা বেড়েছে পিয়াজের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম বৃদ্ধির খবরে হতচকিত ভোক্তারা। যারা গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি দেশি পিয়াজ কিনেছেন, এখন তাদের কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর ভারতীয় পিয়াজের দাম ২৫ থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় উঠেছে। দাম বাড়ার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন পাইকারদের। তারা জানান, প্রতিদিনই দাম বাড়াচ্ছেন পাইকাররা। ফলে খুচরা বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পিয়াজের দাম বাড়ার কোনো যুক্তি নেই বলে মনে করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মিরপুরের খুচরা ব্যবসায়ী খালেক বলেন, গতকালের চেয়ে আজকে (সোমবার) পিয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেশি নিয়েছেন পাইকাররা। বলেছেন, আরও নাকি বাড়তে পারে পণ্যটির দাম। পাইকাররা তাদের জানিয়েছেন, হিলিতে আমদানি পর্যায়ে পিয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু দেশি পিয়াজ তো আমদানি হয় না, তাহলে দাম বাড়ার কারণ কী? এ প্রশ্নের জবাবে খালেক জানান, সামনে কোরবানির ঈদ, বোঝেন তো। এ কারণে তারা (পাইকার) দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রোজার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, বিপণন ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে পিয়াজ পরিস্থিতি নিয়ে বলা হয়, দেশে প্রায় ২২ লাখ টন পিয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দেশে ২৩ লাখ টন পিয়াজ উৎপাদন হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের আট লাখ টনের বেশি পিয়াজ আমদানি করা হয়। চাহিদার তুলনায় দেশে অনেক বেশি পিয়াজ মজুদ রয়েছে। তাই সরবরাহ ব্যবস্থা যথেষ্ট স্বাভাবিক। ফলে দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। রমজানের পর মাস যেতে না যেতেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সেই প্রতিবেদনের তথ্য ভুল প্রমাণ করে এক লাফে পিয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পিয়াজের উৎপাদনের যে তথ্য পাওয়া যায়, তার সঙ্গে চাহিদার কিছুটা গড়মিল আছে। এ কারণে প্রতি বছর পণ্যটির ঘাটতি দেখা যায়। এ ঘাটতি পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। আবার এ আমদানির প্রায় পুরোটাই আসে ভারত থেকে। ফলে দেশের বাজারে পিয়াজের দাম বাড়া-কমার পেছনে ভারতের রফতানি মূল্যের ওপর নির্ভর করে। পিয়াজ আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পাশাপাশি পণ্যটির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে রপ্তানিকারকরা। হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ ট্রাক পিয়াজ আমদানি হতো। বতর্মানে আমদানির পরিমাণ কমে ১৫ থেকে ২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। আর বর্তমানে প্রতি কেজি ছোট দানা ২২ টাকা থেকে ২৩ টাকা আর বড় দানার পিয়াজ ২৫ থেকে ২৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে। আমদানির পিয়াজ শ্যামবাজার কাঁচাপণ্যের আড়ত থেকে ঢাকায় সরবরাহ হয়ে থাকে। আর পাড়া-মহল্লায় খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় উঠে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামবাজার কৃষিপণ্যের আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম বাংলাদেশ জানান, তাদের কাছে দেশি পিয়াজের যে মজুদ ছিল সেটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ কারণে দাম বেড়েছে। বিষয়টি তারা মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

শামসুল আলম বলেন, শিলাবৃষ্টি ও গরমের কারণে এবার আমরা পিয়াজ আড়তে রাখতে পারিনি। সব পিয়াজ ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমাদের কাছে পণ্যটির মজুদ কম। সে কারণে দাম বাড়ছে। এ ছাড়া ভারত পণ্যটির রপ্তানি মূল্যও কিছুটা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি আদা, রসুন এবং অন্যান্য গরম মসলাজাতীয় পণ্যের আমদানি মূল্যও বাড়ছে বলে জানান শ্যামবাজারের এ ব্যবসায়ী নেতা।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765