শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন




স্কুলছাত্রদেরও আটক করে রাখা হয়েছে কাশ্মীরে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৯

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করারও পরিস্থিতি নেই কাশ্মীরে। সেই ক্ষোভ যাতে সামনে না আসে, তার জন্য একদিকে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে চলছে সংবাদমাধ্যমের ওপরে অঘোষিত নিয়ন্ত্রণ। ভারত-শাসিত কাশ্মীর থেকে ঘুরে এসে বুধবার দিল্লিতে এক প্রতিবেদনে এই কথা জানান পাঁচ রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৬০০ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আটক করে রাখা হয়েছে। শহরে বা গ্রামে যেখানেই তারা গেছেন, দেখেছেন তরুণ বা যুবক, এমনকি স্কুলছাত্রদেরও আটক করে রাখা হয়েছে।

বিবিসি বাংলা জানায়, পাঁচ দিন ধরে কাশ্মীরের নানা প্রান্ত ঘুরে সেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন এই রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মীরা। এই নিয়ে তথা ‘কাশ্মীর কেজড’ তথা খাঁচাবন্দী কাশ্মীর শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

তারা রাজধানী শ্রীনগরসহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ঘুরে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছেন যে ৩৭০ ধারা বিলোপ করা এবং যেভাবে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, তা নিয়ে একটা ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে মানুষের মধ্যে। কিন্তু সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই।

ওই দলেরই সদস্য অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রঁজ বলেন, “শ্রীনগর হোক বা তার বাইরে, সব জায়গাতেই মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, যেন একটা জেলখানায় তাদের রেখে দেওয়া হয়েছে। খুব বেশি প্রতিবাদ করতে পারছেন না মানুষ।”

আরও বলেন, “সরকার নিষেধাজ্ঞা একটু শিথিল করলেই মানুষ প্রতিবাদ জানাতে বেরিয়ে পড়ছেন, তাই আবারও নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়ে যাচ্ছে। আর সৌরার মতো যেখানে কিছুটা প্রতিবাদ হয়েছে, সেখানেই ছররা গুলি চালাচ্ছে।”

হাসপাতালগুলোতে ছররা গুলিতে আহত এ রকম বেশ কয়েকজনকে দেখতে পেয়েছেন বলে জানালেন তিনি।

অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তাবাহিনী মাঝরাতেও বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে আটক করছে। এক বৃদ্ধকে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই কেন রাস্তায় যেতে দিতে অনুরোধ করেছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীকে, এই অভিযোগে ছররা গুলি ছোড়া হয়েছে এক যুবকের দিকে।

প্রতিনিধিদলটির আরেক সদস্য সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মইমুনা মোল্লা জানান, “মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বোচ্চ আর দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতাদের তো আটক করা হয়েছে। কিন্তু প্রায় প্রতিটা গ্রাম থেকেই অনেক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।”

প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ সংগঠিত করার দক্ষতা আছে, এমন লোকদেরই আটক করা হয়েছে। কত লোক যে জেলে আছে, কেউ জানে না, বলছিলেন মইমুনা মোল্লা।

এদিকে জঁ দ্রঁজ বলেন, “কাশ্মীরি সংবাদমাধ্যম তো কোনো কাজই করতে পারছে না। তাদের কাছে কোনো সংবাদ পৌঁছাচ্ছে না। তাদেরও খবর জোগাড় করার কোনো উপায় নেই।”

আরও বলেন, “একটা দুটো খবরের কাগজ হয়তো কোনোভাবে বেরোচ্ছে। কখনো দু’পাতা, চার পাতার কাগজ ছাপছে। তাও সেই কাগজ বিক্রি করার সুযোগ বিশেষ নেই। তাদের ওপরেও খবরদারি চলছে।”

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে হাতে গোনা কয়েকজন সাংবাদিকই আছেন, যারা সত্য চিত্রটা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন বলে জানান দ্রঁজ। সঙ্গে যোগ করেন, আন্তর্জাতিক মাধ্যমগুলো অনেকটা আসল ছবি তুলে ধরতে পারছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- বেশির ভাগ ভারতীয় সাংবাদিকই শ্রীনগরের যে অংশ থেকে কাজ চালাচ্ছেন, সেখানে মাঝে মাঝে যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না, তা নয়। সেটাকেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765