শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১০ অপরাহ্ন




যশোরে থানার পাশে দিনে-দুপুরে চুরির রহস্য খুলল ১৫ দিন পর

যশোর প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯
গ্রেফতার চারজন- সমকাল

যশোরে থানার পাশে একটি জুয়েলারি দোকানে দিনে-দুপুরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও স্বর্ণলংকার এবং টাকা উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার দুই সপ্তাহ পর চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা চোরচক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার ও ওই মালামাল উদ্ধার করা হয়।

প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) গোলাম রব্বানী শেখ।

তিনদিন ধরে জুলেয়ার্সের মালিক অমিত রায় আনন্দকে ছায়ার মত অনুসরণের পর সময় নির্ধারণ করে নয় মিনিটেই এই চুরি করে চোররা পালিয়ে যায় বলে তাদের বরাত দিযে পুলিশ জানায়।

আটক চোরচক্রের সদস্যরা হলো- রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার রাঙ্গীপাড়া গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে আব্দুর রহিম বাদশা (২৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি গ্রামের মোশারফের ছেলে সোহেল ওরফে মোটা সোহেল (২৬), কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ইউসুফ নগর গ্রামের তারু মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল (১৭) ও একই গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে সুমন (১৬)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) গোলাম রব্বানী শেখ জানান, গত ২৭ জুন শহরের কোতোয়ালি থানার পাশেই প্রিয়াঙ্গন জুয়েলার্সে দিনে-দুপুরের এমন চুরির ঘটনায় তারা নড়চড়ে বসেন। মামলার একদিন পর তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশের এসআই শামীম হোসেন তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের সনাক্ত করেন। এরপর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আল-মামুনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে ১১ জুলাই চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থানা এলাকা থেকে প্রথমে রহিম বাদশা ও পরে বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে সোহেল ওরফে মোটা সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। সোহেলের তথ্য অনুযায়ী তার বাড়ির আলমারি থেকে চুরি যাওয়া দেড় লাখ টাকা ও ৩ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। ১২ জুলাই ভোরে উজ্জ্বল ও সুমনকে কুমিল্লার মুরাদনগর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গোলাম রব্বানী শেখ আরও জানান, এই চক্রের ৯ জন সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের সনাক্ত করা হয়েছে, আটকের জন্য অভিযান চলছে। আর এই চক্রের টিম লিডার কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বালাকোট গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে আব্দুল। এই আব্দুল এরকম আরও কয়েকটি দলকে পরিচালনা করে। এরা এর আগে সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ধরণের চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। এদের টার্গেট সোনার দোকান, মোবাইল ফোন, বিকাশ ও ফ্রেক্সিলোডের দোকান।

পুলিশ জানায়, চোরেরা স্বীকার করেছে, টিম লিডার আব্দুলসহ চক্রের একাধিক সদস্য কয়েকবার এসে দোকানটি দেখে গেছে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রত্যেক চুরির ক্ষেত্রেই তারা এই কাজ করে। সর্বশেষ চুরির তিনদিন আগে তারা যশোরে এসে অবস্থান নেয়। তিনদিন ধরে তারা ছায়ার মত দোকান মালিক অমিত রায় আনন্দকে অনুসরণ করে। ২৭ জুন আনন্দ দোকান বন্ধ করে দুপুরের খাবার খেতে বাড়ি গেলে একজন তাকে অনুসরণ করে বাড়ি পর্যন্ত যায়। সেখান থেকে সঙ্কেত পাওয়ার পর তারা দোকানের তালা কেটে, ত্রিপল ব্যবহার করে দোকানের সামনে ঢেকে মাত্র ৯ মিনিটে দোকান লুট করে পালিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, ২৭ জুন বিকেলে যশোর কোতোয়ালি থানার পাশের প্রিয়াঙ্গন জুলেয়ার্সের দু’টি গেটের ৪টি তালা কেটে চোরেরা নিয়ে যায় ৩৭ ভরি সোনা আর আড়াই লাখ টাকা।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765