শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন




ভয়াল ২১শে আগস্ট আজ, ১৬ আসামী পলাতক

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলা মামলার ১৬ আসামি এখনও অধরা। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার এবং বিদেশে থাকা আসামিদের দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেয়া হলেও সে কার্যক্রম চলছে কচ্ছপগতিতে।

কবে নাগাদ পলাতক আসামিদের গ্রেফতার বা বিদেশে থাকা আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে- তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছেন না। তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামিদের লোকেশন আমরা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চলছে।

এক্ষেত্রে কিছু আইনি জটিলতাও রয়েছে। এসব আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শিগগিরই আমরা এর সুফল দেখতে পাব।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। তদন্তে উঠে আসে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশসহ (হুজি) তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণা হলেও চূড়ান্ত বিচার এখনও শেষ হয়নি।

এ বছরের ১৩ জানুয়ারি দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বর্তমানে এটি কার্য তালিকায় আসার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে এসব নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়।

ভয়াবহ সেই ঘটনার ১৪ বছর ১ মাস ২০ দিন পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলা দুটির রায় ঘোষণা হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

হত্যা মামলায় ১৪টি এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২টি বিষয় বিবেচনা করা হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমসহ ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামির মধ্যে দুজন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডিত ১৯ জনের মধ্যে ১২ জন পলাতক। এছাড়া রায়ে আনসার ও ভিডিপির সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, সাবেক তিন আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীসহ ১১ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডও দেয়া হয়।

রায়ে ৪৯ আসামির সবারই সাজা হয়। যদিও মামলার আসামি ছিল ৫২ জন। এর মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামি ৪৯ জন।

রায় ঘোষণার সময় মোট ১৮ আসামি পলাতক থাকলেও রায় ঘোষণার পর গত ২৮ জানুয়ারি দুই পলাতক আসামি সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও সাবেক পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান খান বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত ওইদিনই তাদের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765