শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন




ফেসবুককে শৃঙ্খলায় আনতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভালো দিকের পাশাপাশি অনেক নেতিবাচক দিক রয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ মাধ্যমকে শৃঙ্খলার মধ্যে নেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন।

বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) সম্পাদক মাহফুজুর রহমানের ‘সাংবাদিকতা রাত-বিরাতে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। খবর ইউএনবির

মন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমের ভালো দিক আছে, আবার খারাপ দিকও আছে। এটি আন এডিটেড প্লাটফর্ম। যা ইচ্ছা তা প্রকাশ করা যায়। আগে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক মিডিয়ার ওপর নির্ভর করতে হত, এখন নাও করতে হতে পারে। যেমন বরগুনার প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড। আবার একই সাথে অতীতে এ মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে, যা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করেছে।‘

‘এটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। যেখানে কিভাবে শৃঙ্খলা আনা যায়, যাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অকল্যাণকর ও কোনো কিছু ক্ষতিকর না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

সাংবাদিক মাহফুজুর রহমানের তিন দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা এ বই প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বইয়ে সাংবাদিকতার নানা বিষয় উঠে এসেছে। সবাই বলতে পারে, কিন্তু লিখতে পারে না। মাহফুজুর রহমানের এ বই সাংবাদিকসহ সবার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লেখার মাধ্যমেই মানুষ বেঁচে থাকে। অনেক বড় সাংবাদিক, কিন্তু ভালো কিছু লেখেননি, তারা কিন্তু হারিয়ে গেছেন। কিন্তু যারা লিখেছেন, তারা লেখার মাধ্যমে বেঁচে আছেন। লেখা শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজকে, সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার জন্য এবং জাতিকে দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রয়োজন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। যুক্তি ভিত্তিক, ন্যায় ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যারা এ মাধ্যমের সাথে যুক্ত তাদের পেশাগত দক্ষত, উৎকর্ষতা একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ। আর এ ধরনের বই পেশাগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি।

গত ১০ বছরে দেশে সাংবাদিকতার ব্যাপক বিকাশ হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে ৭শ থেকে এখন ১৩শ হয়েছে। অনলাইন হাতে গোনা কয়েকটি ছিল, কিন্তু এখন কয়েক হাজার।

অনলাইনগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় নেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিবন্ধনের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছি। এ মাসের ১৫ তারিখ সে সময়সীমা শেষ হবে। কিন্তু এর মধ্যেই আট হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে।

‘আর টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা আগে ছিল ১০টি। এখন শুধু অন এয়ারেই রয়েছে ৩৫টি। আর লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ৪৫টিকে। সেই সাথে নিউ মিডিয়া (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) তো রয়েছেই,’ যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মাহফুজুর রহমানের ‘সাংবাদিকতা রাত-বিরাতে’ বইটি বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা। তাই বইটি নবীনদের নানাভাবে সহায্য করবে।

অধ্যাপক আরেফিন বলেন, বইটি মূলত তিন দশকের অভিজ্ঞতায় লেখ। এ সময়ে সাংবাদিকতা অনেক পাল্টে গেছে। এখানে সেগুলোই উঠে এসেছে। মোবাইল আসার পর থেকে সাংবাদিকতার পাল্টে যাওয়া শুরু, আর বর্তমানে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠেকেছে, কিন্তু শেষ কোথায় কেউ বলতে পারেন না।

তথ্য প্রযুক্তির এ যুগেও সম্পাদনাকে সাংবাদিকতার প্রাণ উল্লেখ করে সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক বলেন, সাংবাদিকতা অনেক কঠিন কাজ। কারণ তাদের সব সময় সত্য নিয়ে কাজ করতে হয়।

সাংবাদিকতার সাবেক ছাত্র ও বইটির লেখক সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান নিজের বই সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রেণিকক্ষ ও সংবাদ কক্ষের মধ্যকার সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি জানান, পেশাগত জীবনে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে সব সময় শ্রেণিকক্ষ ও সংবাদ কক্ষের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাপ’ লক্ষ্য করেছেন। সেই বিষয়গুলোও বইটিতে তুলে ধরেছেন বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক নজরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান বইটিতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। কারণ বইটিতে তিনি নিজেদের (সাংবাদিক) আত্মসমালোচনা করেছেন। সবাই আত্মসমালোচনা করতে জানে না।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সবাই লিখতে পারে না। আবার লিখলেও পাঠযোগ্য হয় না। মাহফুজুর রহমানের বইটি সুপাঠ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক, মাহফুজুর রহমানের সহধর্মীনি সৈয়দা ফারজানা তাহসিন, সিনিয়র সাংবাদিক ফারুক কাজী, অজিত কুমার প্রমুখ।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765