শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন




নড়াইলে অপরিকল্পিতভাবে খাল খননে দূর্ভোগে এলাকাবাসি

এস এম হালিম মন্টু, নড়াইল
  • প্রকাশ: বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৯

নড়াইল সদরের গারোচোরা খাল অপরিকল্পিতভাবে খননের কারনে এলাকাবাসী চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। খাল পূনঃখননের পর খালের পাশ দিয়ে নির্মিত পাকা রাস্তা প্রায় ২শ গজ ভেঙ্গে গেছে ও মাটি দেবে গেছে। প্রায় ১৫টি বাড়ির উঠানের সামনের মাটি ভেঙ্গে খালের সাথে বিলীন হচ্ছে। এ পর্যন্ত রাস্তার পার্শ্বের ৬টি বৈদ্যুতিক খুটি হেলে পড়েছে। ফলে যেকোনো সময় বিদ্যুৎস্পর্শে মানুষের জীবনহানীর মতো ঘটনা ঘটতে পারে

সদর উপজেলার শহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর-গারোচোরা গ্রামের পার্শ্বে চিত্রা নদী থেকে চানপুর পর্যন্ত ৩কিঃমিঃ একটি খাল ছিল। দীর্ঘ ৫০ বছর এ খাল খনন না করায় অধিকাংশ জায়গা দখল হয়ে যায়। এখানে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাছ-গাছালি বেড়ে ওঠে। এ বছরের জানুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক তিনটি প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্ববধানে ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ খালটির ১৭শ মিটার পূনঃখনন করা হয়। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও কোথাও খালের মুখ ১৫-২০ ফুট থাকলেও সেখানে গভীরতা করা হয়েছে ১৪ থেকে ১৬ ফুট, আবার খালের উৎস মুখ নদীর কাছাকাছি এলাকায় খাল না কেটে কাটা হয়েছে ড্রেন। ফলে নদী থেকে খালের ভেতরে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। এদিকে অনেক জায়গায় খাড়াখাড়িভাবে খাল খনন করায় খালের দু’পাড়ের মাটি ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং খাল পাড়ের মানুষের বসতি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। খালের পূর্ব পাশ দিয়ে নড়াইল পৌরসভার নির্মিত পাকা সড়কের বিভিন্ন জায়গা দেবে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪টি বৈদ্যুতিক খুটি হেলে পড়েছে এবং বাকিগুলি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

দলজিৎপুর গ্রামের অলেয়া বেগম (৪৫) বলেন, তার তিন শতক জায়গা খালের মধ্যে চলে গেছে। এভাবে এখানে প্রায় ১৫জনের ৩০ থেকে ৩৫জনের নিজস্ব জায়গা খালের মধ্যে চলে গেছে। এছাড়া কয়েক লাখ টাকার মূল্যবান ফলজ ও বনজ গাছ কাটা পড়েছে।
একই গ্রামের খাল পাড়ের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লুৎফুন নেছা বলেন, খালের পাড় ভেঙ্গে তার জায়গা খালের মধ্যে চলে যাচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে না কেটে ঝুড়ি-কোদাল ব্যবহার করে খাল খনন করলে এ সমস্যা হতো না বলে মনে করেন।

গারোচোরা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন জানান, খাল খননের পর থেকে প্রতিদিনই একটু একটু করে পাকা রাস্তা ভেঙ্গে খালের সাথে বিলিন হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪টি বৈদ্যুতিক খুটি হেলে পড়েছে। এখন দু’টি খুটি যেকোনো সময় খালের মধ্যে পড়তে পারে। এছাড়া তিনি বলেন, খালের উৎস মুখের কয়েক’শ গজ সরু ড্রেনের মতো হওয়ায় জোয়ারের সময়ও নদীর পানি খালে প্রবেশ করে না। ফলে যে উদ্যেশ্যে খাল খনন করা হয়েছে তা পূরণ হয়নি।

এ কাজের ঠিকাদার এনামুল হক কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রশাসন থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া যায়গার ওপরই খাল খননের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর বাঁধার কারনে কয়েক জায়গা ঠিকমতো কাটতে পারেননি বলে জানান।

নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন, দীর্ঘ বছর পরে এ খাল পূনঃখননের উদ্যোগ নেওয়ায় অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় এলাকাবাসীর বাঁধার সম্মুখীন হওয়ায় কাজ করতে সমস্যা হয়েছে ।স্থানীয় ব্যক্তিদের বাঁধার কারনে গারোচোরা খালের ৭০ভাগ কাজ হয়েছে বলে মনে করেন।

নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, পরিবেশ রক্ষা, মৎস চাষ, কৃষি চাষাবাদসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য এসব খাল পূনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গারোচোরার সমস্যা দেখবেন বলে জানান তিনি।

 

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765