বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন




ছাত্রদলের কাউন্সিল ঈদের পর

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০১৯

কাউন্সিল ঘিরে ছাত্রদলের সংকটের যবানিকাপাত ঘটেছে। হাইকমান্ডের আশ্বাসে বিদ্রোহ থেকে সরে আসছেন সংগঠনের সাবেক নেতারা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভের কারণে বহিষ্কার হওয়া নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে। তাদেরকে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে ঠাই দেয়া হবে। সবাইকে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য কাউন্সিল হবে ঈদুল আজহার পর।

সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএনপির জেষ্ঠ নেতাদের দীর্ঘ হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত ছাত্রদলের সংকট সমাধান হলো।

বৈঠক সূত্র জানা গেছে, তারেক রহমানের যে কোনো সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গীকার করেছেন বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে। তারাই দফায় দফায় ক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সংকট সমাধানের পথ বের করেন।

জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সন্তান ভুল করলে তাৎক্ষণিক শাসনও বাবা করেন, পরোক্ষণেই ক্ষমাও বাবাই করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করার মধ্য দিয়ে ছাত্রদলের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।

ছাত্রদলের কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল ১৫ জুলাই। কিন্তু সংগঠনটির আগের কমিটির নেতাদের বিক্ষোভের মুখে কাউন্সিল পেছাতে হয়েছে। তাদের দাবি ছিল, ছাত্রদলের কমিটি গঠনে বয়সসীমা তুলে দিতে হবে। এ নিয়ে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লাঞ্চিতও করা হয়। ভাংচুর করা হয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়। পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটির ১২ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। এতে বিক্ষোভ দমানো যায়নি।

দীর্ঘ আলোচনার সংকটের সমাধান হলো। তারেক রহমানের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনার পর বিক্ষোভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা।

সংকট সমাধানের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহেই ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে। আর ক্ষুব্ধ নেতাদের যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপাশি ছাত্রদলের কাউন্সিল ঘিরে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা, বাছাই ও আপিল কমিটিতে ক্ষুব্ধ নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

নতুন করে ছাত্রদলের কাউন্সিলের তারিখ ঈদুল আজহার পর যে কোনো একদিন নির্ধারণ করা হবে।

এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, ‘আমাদের আর কোনো ক্ষোভ নেই। রাজনৈতিকভাবে ভাইয়া (তারেক রহমান) আমাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি আমাদের ছাত্রদলের কাউন্সিলে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে আমরা সহযোগিতা করব। তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।’

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গতকালের বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ ক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরউদ্দিন তুহিন, জয়দেব জয়, বায়েজিদ আরেফিন, দবিরউদ্দিন তুষার, আজিজ পাটোয়ারিসহ ৪০ জনের মতো উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রদলের সাবেক নেতারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন এবং তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। বিগত দিনে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রণকারী কথিত সিন্ডিকেট নিয়ে নিজেদের তিক্ততার কথাও তুলে ধরেন। প্রায় ২০ জনের মতো নেতা তাদের বক্তব্যে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি করেন।

তারা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদলের কাউন্সিল পর্যন্ত এ কমিটি চান। তাদের নেতৃত্বে কাউন্সিল শেষে এ সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেয়ার কথাও বলেন ক্ষুব্ধ নেতারা।

তারেক রহমান ক্ষুব্ধ নেতাদের কথা শুনে বলেন, ‘ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য দ্রুত কাউন্সিল করতে হবে। এজন্য আপনাদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’ জবাবে ছাত্রনেতারা কাউন্সিল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা বলেন। পরে ক্ষুব্ধ নেতাদের দাবির বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন তারেক রহমান। তবে যে সিদ্ধান্তই তিনি দেবেন তা মেনে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

এ সময় ছাত্রনেতারা তারেক রহমানের যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করেন।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765