শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন




খুলনায় ২০ দিনে ধর্ষণের শিকার ১৯ শিশু-কিশোরী

খুলনা প্রতিনিধি :
  • প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৯

খুলনায় হঠাৎ করেই শিশু-কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা মাহামারী আকার ধারণ করেছে। গত ২০ দিনে ১৯ শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মহানগর এলাকায় তিনটি ধর্ষণের ঘটনায় ৮ আসামিও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার এ সকল শিশু ও কিশোরীদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) তে ভর্তি করা হয়েছে।
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ দিনে খুলনার পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, রূপসা, কয়রা, ফুলতলা, দাকোপ ও দিঘলিয়া উপজেলা থেকে সেক্সুয়াল এসার্ল্ড নিয়ে ৯ শিশু, কিশোরী ও নারী ভর্তি হয়েছেন। মহানগরে সদর, সোনাডাঙ্গা খালিশপুর ও হরিণটানা এলাকায় ১০ জন ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাসেবা নেন।
গত ১৮ জুন বিকেলে খুলনা ইসলামী কলেজ এলাকায় ৭ বছর বয়সের দুইজন শিশু কন্যাকে চকলেট দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কলেজের শিক্ষকদের টিভি দেখা কক্ষে নিয়ে যায় নৈশ প্রহরী মোঃ মহিবুল্লাহ (৫০)। এরপর ওই কক্ষের দরজা বন্ধ করে অবুজ দুই শিশুকে যৌন নিপীড়ন করে। ঘটনাটি শিশুদের অভিভাবকরা জানতে পেরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করে। শিশু দু’টির ডাক্তারী পরীক্ষায়ও অভিযোগের সত্যতা মেলেছে। এ ঘটনায় মঞ্জু বেগমের স্বামী বাদী হয়ে ১৯ জুন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মোঃ মহিবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত মহিবুল্লাহ বয়রা ফারুকীয়া ক্রস রোডের আলী আকবরের ছেলে।
গত ২৯ জুন নগরীর ফারাজীপাড়া বিকে রায় রোডের স্কুল ছাত্রী (১৪) কে প্রেমের প্রস্তাব ও প্রলোভন দেখিয়ে শান্ত বিশ্বাস নামের এক যুবক ১৬৫, বিহারী কলোনীস্থ নুরুন্নবী আহমেদের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। এরপর সেখানে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সেখানে ধর্ষণের চিত্র ভিডিও ধারণও করা হয়েছিলো। এ ঘটনায় গত ৩০ জুন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে (নং-২২)। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলো নুরুন্নবী আহমেদ (১৮), মঈন হোসেন ওরফে হৃদয় (২০), শেখ শাহাদাৎ (২০), রাব্বি হাসান ওরফে পরশ (২১), মাহামুদ হাসান ওরফে আকাশ (২১), সৌরভ (১৯), শান্ত বিশ্বাস (২৩), মোঃ জিহাদুল কবির ওরফে দিয়ান (১৯), প্রীতম (২৩), মিম বিশ্বাস (২৩)।
গত ২৮ জুন বিকেলে নগরীর বয়রা শ্মশান ঘাটের বিপরীতে আল আকসা এলাকায় একটি বাসায় ১৩ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বর্তমানে তাকে খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। সেদিন শিশুটির বাবা ও মা না থাকার সুযোগে ওই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মিলন (২৭) ঘরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করার পর ঘটনাটি কাউকে না জানাতে হুমকি দেয়। এরপর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি তার মাকে জানায়। পরবর্তীতে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বুধবার ভোরে তাকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশের আশ্বাসে ধর্ষিতার পরিবার বাদী হয়ে হরিণটানা থানায় মামলা করায় আসামি মিলনকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী এড. মোমিনুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের মতো জঘণ্য অপরাধ রোধে সামাজিকভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ধর্ষণের শাস্তি ও সামাজিক ক্ষতির দিক তুলে ধরে প্রচার প্রচারণা চালাতে পারে। এক্ষেত্রে অনেকটা জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে বলে ধারণা করেন তিনি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা মেট্রোপলিটন এলাকায় মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও ধর্ষণের মতো জঘণ্য অপরাধের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বুদ্ধির জন্যে উঠান বৈঠকসহ মতবিনিময় সভায় কথা বলেছি। এছাড়া প্রতিটি থানা এলাকায় এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্যদের সাথে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হয়। তাছাড়া থানা এলাকায় পুলিশের নজরদারি রয়েছে। কেউ অপরাধ করে পার পাবে না।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765