শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪, ০৭:০২ অপরাহ্ন




কলমের আঘাতে চোখের জ্যোতি হারাতে বসেছে ছাত্র, শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

পিরোজপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯
আল-মামুন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে হাতের লেখার খাতা দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষকের কলমের আঘাতে চোখের জ্যোতি হারাতে বসেছে আল মামুন (৯) নামে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্র।

উপজেলার ৩৩ নম্বর উত্তর পশ্চিম কলারদোয়ানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ২ জুলাই ঘটনাটি ঘটে।

আল মামুন ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং কলারদোয়ানিয়া গ্রামের সোহাগ রহমানের ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সাইফুল ইসলাম খোকন। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রের মা মাকসুদা বেগম বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত সোমবার পিরোজপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।

আদালত অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।

আল মামুনের পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে পরিবারটিকে প্রভাবশালী একটি মহল চাপ দিচ্ছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুলাই বেলা ১১টার দিকে দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন সব শিক্ষার্থী হাতে লেখার খাতা শিক্ষকের সামনে প্রদর্শন করলেও শিক্ষার্থী আল মামুন হাতে লেখা খাতা দেখাতে পারেনি। সে শিক্ষককে জানায়, তার খাতা শেষ হয়ে গেছে কিন্তু তার বাবা খাতা কিনে দিতে পারেনি। এ সময় আল মামুন তার শেষ হয়ে যাওয়া খাতাটি নিয়ে শিক্ষককে দেখানোর জন্য টেবিলের সামনে গেলে শিক্ষক সাইফুল ইসলাম খোকন ওই শিক্ষার্থীকে একটি চড় মারেন। এ সময় তার হাতে থাকা কলম তার বাম চোখে ঢুকে জখম হয়।

সংবাদ পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর মা-বাবা বিদ্যালয় থেকে আল-মামুনকে পাশ্ববর্তী উপজেলা স্বরুপকাঠীতে নিয়ে চক্ষু চিকিৎসক মো. রেজাউল হকের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করান।

ওই ছাত্রের দিনমজুর বাবা সোহাগ বলেন, সাধ্যমতো ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। এখন উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। ডাক্তার বলেছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা না নিলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ওই শিক্ষক বা তার পক্ষ থেকে কেউ তার ছেলের চিকিৎসার খোঁজ নেয়নি। বাধ্য হয়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় আদালতে মামলা করেছি। মামলা করার পর একটি মহল মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।

চিকিৎসক মো. রেজাউল হক বলেন, ওই শিক্ষার্থীর চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে সময় লাগবে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা না নিলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘বিষয়টি এভাবে গড়াবে বুঝতে পারিনি। আমি এ ঘটনায় অনুতপ্ত। আমি ওই ছাত্রের বাবাকে বলেছি, ওর চোখের চিকিৎসায় যা খরচ হবে আমি দেব।

ঘটনার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিকদার আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, এ ঘটনায় আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। মামলা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি শুনে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে রোববার অফিসে আসতে বলেছি। তাদের কাছে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাজিরপুর থানার ওসি মো. মুনিরুল ইসলাম মুনির বলেন, আদালত থেকে এখনও থানায় মামলাটি পৌঁছেনি। মামলাটি পাওয়ার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765