শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৬ অপরাহ্ন




দলে দলে পালাচ্ছে মানুষ, কী ঘটতে যাচ্ছে কাশ্মীরে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশ: রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৯

আতঙ্কের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন কাশ্মীরের মানুষ। দলে দলে বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। কেউ কেউ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগাড় করে রাখছেন।

সরকার বিবৃতি দিয়ে পর্যটকদের কাশ্মীর ত্যাগ করতে বলেছে। তার ওপর নতুন করে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে ওই রাজ্যে। প্রশ্ন উঠেছে কী ঘটতে চলেছে কাশ্মীরে।
গত শনিবার কাশ্মীরে থাকা পর্যটক ও অমরনাথ যাত্রায় অংশ নেওয়া হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের কাশ্মীর ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। বাড়তি আধাসামরিক বাহিনীর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছে হামলা হতে পারে কাশ্মীরে।

তাই অমরনাথ যাত্রায় অংশ নেওয়া হাজারো তীর্থযাত্রীদের কাশ্মীর থেকে ফেরত পাঠানো শুরু করে সরকার।

এদিকে সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গত ৩১ জুলাই রাতে কেরন সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাদের হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছে তারা।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। শুধু দাবি প্রত্যাখ্যান নয়, উল্টো পাকিস্তান দাবি করছে, লাইন অব কন্ট্রোল বা দুই দেশের সীমানা নির্ধারণকারী নিয়ন্ত্রণরেখায় গুচ্ছ বোমা হামলা করেছে ভারত। তাতে দুজন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। ভারত আবার এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

তবে আশ্চর্যের ব্যাপার ভারতের স্বরাষ্ট্র কিংবা প্রতিরক্ষা কোনও মন্ত্রণালয়ই কাশ্মীরের চলমান এই উত্তেজনা নিয়ে কোনও কথাই বলছে না। ফলে নানারকম জল্পনা ও আশঙ্কার ডালপাল ছড়াচ্ছে।

অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী বিজেপি সরকার কি সংবিধানের ৩৭০ বা ৩৫ ধারা তুলে দেয়ার ঘোষণা করতে চলেছে? না কি জম্মু-কাশ্মীরকে তিন প্রশাসনিক এলাকায় ভাগ করা বা বিধানসভার আসন পুনর্বিন্যাসের ঘোষণা হবে?

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের মন্তব্য, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘মিসঅ্যাডভেঞ্চার’-এর প্রস্তুতি চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নেয়ার পরে অমিত শাহ নিজে কাশ্মীরে ঘুরে এসেছেন।

তারপর এক একে করে তদন্ত সংস্থা (আইবি), সেনাবাহিনীর প্রধান ও আরও অনেক শীর্ষস্থানীয় সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা কাশ্মীর সফরে যান। কাশ্মীরের সেনা কর্মকর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘জঙ্গি’ দলে নাম লেখালে মরতে হবে। ফলে কথিত জঙ্গিবিরোধী অভিযানও শুরু হতে পারে।

আরও শোনা যাচ্ছে, আগামী ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রীনগরের লালচকে গিয়ে পতাকা উত্তোলন করতে পারেন। জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচনে আগে তা বিজেপির তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে বলেই নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার চেষ্টা।

জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক কাশ্মীরের সাবেক মুখমন্ত্রীসহ প্রদেশেটির সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, কাশ্মীর নিয়ে সংবিধানের ৩৭০ বা ৩৫ ধারা বিলোপ হচ্ছে না। কিন্তু কী হবে তা যে তিনি নিজেও জানেন না সেটাও স্বীকার করেছেন।

সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এসব জল্পনার কোনওটাই সত্যি নয়। কাশ্মীরে বড় রকমের নাশকতার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের মদদপুষ্ট সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন। জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের ১৫ সদস্যের একটি দল পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা নেতা গুলাম নবী আজাদ, সীতারাম ইয়েচুরিরা প্রশ্ন তুলেছেন, সংসদ অধিবেশন তো চলছে কিন্তু কাশ্মীর নিয়ে সেখানে কোনো বিবৃতি দেয়া হচ্ছে না কেন? বিরোধীদের অনেকে বলছেন সরকার কাশ্মীরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী বলেন, ‘আমরা আগামী সোমবার দাবি তুলব প্রধানমন্ত্রী যেন নিজে বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিন।’ হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি বলছেন, ‘ভারত গণহত্যা করতে চলেছে।’

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765