শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন




ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ঈদুল আজহা কাল

নতুনবার্তা ডেস্ক
  • প্রকাশ: রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৯

মহান ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর মুসলিম উম্মাহর বৃহত্ ধর্মীয় উত্সব ঈদুল আজহা আগামীকাল সোমবার। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাই করা পশুর মাংস বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, কেবল নিয়ত ছাড়া। ঈদুল আজহার অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে, মনের পশু অর্থাৎ কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা।

পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতি বছর জিলহজ মাসের দশ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আরবি আজহা এবং কোরবান উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উত্সর্গ। কোরবানি শব্দের উত্পত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোত্সর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা ও অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া প্রভৃতি।

সুরা হজে বলা হয়েছে, এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়। আল্লাহর বান্দারা কে কতটুকু ত্যাগ ও খোদাভীতির পরিচয় দিতে প্রস্তুত এবং আল্লাহপাকের নির্দেশ পালন করেন তিনি তা-ই প্রত্যক্ষ করেন কেবল। প্রত্যেক আর্থিক সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দিল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে (মুসনাদে আহমদ)। আল কোরআনের সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, অতএব তোমার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড় এবং কোরবানি কর। সুরা হজে বলা হয়েছে, কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।

জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কেনো একদিন কোরবানি করা যায়। কোরবানিকৃত পশুর ৩ ভাগের ১ ভাগ গরীব-মিসকিন, একভাগ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়। আবার পুরোটাই বিলিয়ে দেওয়া যায়। এদিকে ৯ জিলহজ ফজর নামাজের পর থেকে ১৩ জিলহজ আছর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তালবিয়াহ পাঠ করা ওয়াজিব। তালবিয়াহ হলো, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জাতির বাত্সরিক আনন্দ-ফুর্তির দিন আছে। এই দিনে ধনী-গরীব, বাদশা-ফকির নির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করে, একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে। ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উত্সব।

আজ থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে তিনদিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ আয়োজনে বের হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, সবকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও এফএম রেডিও ঈদ উপলক্ষ্যে কয়েক দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা ছেড়েছে লাখ লাখ মানুষ। ফলে রাজধানী অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে।

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জাতীয় পার্টির-(জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765