1

মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানি আজ

আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো তার স্ত্রী কারাবন্দি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিন মিন্নির জামিন হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তার আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম। তিনি গত ২৩ জুলাই জেলা ও দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে মিন্নির পক্ষে জামিনের আবেদন করেছিলেন। সেদিন জামিনের শুনানির পর আবেদনটি মিস কেস হিসেবে নথিভুক্ত করে নিম্ন আদালতের নথি তলব করেছিলেন বিচারক। এছাড়া ৩০ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছিল আদালত।

মিন্নির আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম সোমবার দেশ বলেন, ‘রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ১৫ জন স্বীকারোক্তি দিলেও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার জবানবন্দি প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন। মিন্নিকে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।’

আইনজীবী আসলাম আরও বলেন, ‘মিন্নির জামিন আবেদন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে জামিনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আমরা বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করব। আশা করি, আমাদের যৌক্তিকতার ভিত্তিতে আদালত মিন্নির জামির মঞ্জুর করবেন।’

মিন্নির আরেক আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) মিন্নির জামিন আবেদনের পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, অ্যাডভোকেট নিলা গোস্বামী এবং সংস্থাটির লিগ্যাল এইড প্রধান ও ঢাকা জেলা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী মো. ফারুক আহম্মেদ ছাড়াও ব্লাস্টের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহিদা তালুকদার ও অ্যাডভোকেট এ জেড এম শহীদুজ্জামানসহ প্রায় ৩০ জন আইনজীবী বরগুনায় আসছেন।’

অন্যদিকে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া মিন্নির জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে পিপি ভূবন চন্দ্র হাওলাদারকে সহযোগিতা করবেন আইনজীবী মুজিবুল হক কিসলু ও কামরুল আহসান মহারাজ।

ভূবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য হচ্ছে, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে যে সমস্ত সাক্ষ্য, তথ্য ও প্রমাণাদি তুলে ধরা হয়েছে তাতে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তার জামিন হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই।’

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সবাই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দেশব্যাপী আলোচিত এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে এখনো চারজন গ্রেপ্তার হয়নি।

গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে প্রকাশ্যে বহু পথচারীর উপস্থিতিতে রিফাতকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে একদল যুবক। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।