1

বাগেরহাটে নিউ বসুন্ধরার এমডির পর এবার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান কারাগারে

 

বাগেরহাটে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানকে দুদকের করা ১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে বাগেরহাটের মূখ্য বিচারিক হাকিম (চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) স্বপন কুমার সরকারের আদালতে আনিসুর রহমান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানী শেষে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে কঠোর নিরাপত্তায় পুলিশ তাকে জেলা কারাগারে পৌছে দেয়। দুদকের করা টাকা পাচারের মামলার এপর্যন্ত এজাহারনামীয় দুই আসামীকেই আদালত কারাগারে পাঠালো।

 

আসামীদের বিরুদ্ধে দুদক প্রতারণার মামলা করলে গ্রেপ্তার এড়াতে তারা দুজনেই আত্মগোপণে চলে যান। এরআগে গত ১৫ জুলাই এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার আদালতে আতœসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৮ জুলাই এই প্রতিষ্ঠানের এমডি আব্দুল মান্নান গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ১১০ কোটি টাকা কোথায় কাদের কাছে পাচার করেছেন তা জানতে তাকে দুই দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুদককে অনুমতি দেয়।
গত ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দুদকের খুলনা জেলা সমšি^ত কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (এডি) মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের একটি মামলা করেন। নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় শহরের মিঠাপুকুরপাড়ে অবস্থিত।
দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী এই প্রতিবেদককে বলেন, গত ৩০ মে বাগেরহাট শহরের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে। এই মামলার পলাতক দ্বিতীয় আসামী বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আতœসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন। এরআগে গত ১৫ মে ওই মামলার প্রধান আসামী আব্দুল মান্নান তালুকদার আদালতে আতœসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।

 

আরো পড়ুন >বাগেরহাটে অর্থপাচার মামলায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেটের এমডি মান্নান কারাগারে

 

দুদক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি আব্দুল মান্নান তালুকদার নামে এক ব্যক্তি সেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েলস্টেট লিমিটেড নামে একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয় বাগেরহাট শহরের মিঠাপুকুরপাড় জামে মসজিদের ঈমাম আনিসুর রহমানকে। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতিলাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার প্রলোভনে বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি। গত কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি (একাউন্ট) হিসাব থেকে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এই বিপুল পরিমান অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন। এই টাকা কোথায় পাচার করা হয়েছে তা জানতে দুদক অনুসন্ধান চালাচ্ছে।