1

পাঁচশো বছরের ঐতিহ্যবাহী মায়েদের বাজার

বজি, মাছ , রান্নার জিনিসপত্র, তাজা ফলমূল, পোশাক থেকে শুরু করে অন্যান্য বাজারের মতো দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সব কিছুই পাওয়া যায় মনিপুরের ‘ইমা কেইথল’ বাজারে। তবে এই বাজারের আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য আছে। এখানকার ৪ হাজার ব্যবসায়ীদের সবাই নারী। স্থানীয়ভাবে ‘ইমা কেইথল’ অর্থ মায়েদের বাজার।

মিয়ানমার বর্ডার থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্ব ভারতের ইম্ফাল শহরে এই বাজারটির অবস্থান। এশিয়ার মধ্যে এটি নারীদের পরিচালিত সবচেয়ে বড় বাজার। ধারণা করা হয় , গোটা বিশ্বেও এটিই নারীদের একমাত্র বড় বাজার।

মায়েদের এই বাজারটি ঠিক কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে ধারণা করা হয় ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে এই বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ‘ইমা কেইথল’ বাজারটি লাল্লুপ যুগে গড়ে ওঠে। ওই সময় মনিপুর সম্প্রদায়ের পুরুষদের প্রায়ই রাজাদের সেবায় ডাকা হতো। তখন তারা নারীদের ওপরই পরিবার ও কৃষিকাজের দেখাশোনার ভার দিয়ে চলে যেতেন।

তখন থেকেই ধীরে ধীরে বাজারটি গড়ে ওঠে। তবে শুধুমাত্র বিবাহিত নারীদেরই ওই বাজারে ব্যবসা করার অনুমতি আছে। বংশ পরষ্পরায় বিবাহিত নারীরা ব্যবসার সুযোগ পান।

বিভিন্ন সময়ে নারীদের এই বাজারের উপরে আক্রমণ নেমে এসেছে। ষড়যন্ত্র করা হয়েছে যাতে বাজার ভেঙে যায়। তবে নারীরা রুখে দাঁড়িয়েছেন। স্বাধীনতার আগে ১৯০৪ ও ১৯৩৯ সালে নারীরা রীতিমতো লড়াই করে বাজার রক্ষা করেছেন। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বাজার বেশ কিছুদিন পুরোপুরি বন্ধ ছিল।

ঐতিহ্যবাহী এই বাজারে নিয়মিত পর্যটকদের আনাগোনা দেখা যায়।এখানকার হস্তশিল্প, পোশাক এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি জিনিসপত্র তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সূত্র : মেইল অনলাইন