1

খুলনা জেলা পরিষদের গাড়ী চালকের হাতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

ভুয়া বিল ও ভাউচারে স্বাক্ষর না করা এবং সন্দেহজনক প্রকল্পের চেক আটকে দেওয়ায় খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক মোঃ শহীদুল্লাহ তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে ঠিকাদার ও অন্যন্য কর্মচারীরা এসে মাহবুবকে রক্ষা করেন।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহাবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান গাড়ির চালক মো. শহিদুল্লাহ কিছু দিন আগে গাড়ির ক্যামেরা কেনার কথা বলে ২৪ হাজার ৯৭০ টাকার একটি বিল জমা দেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন ওই ক্যামেরার দাম ৫ হাজার টাকা। বিলটি আটকে দিয়ে তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। একই ব্যক্তি রূপসার আলাইপুর উত্তর শেখপড়া হযরত আবু বক্কার (রা.) মসজিদ উন্নয়নের নামে ১ লাখ টাকার একটি প্রকল্প দাখিল করেন। এই প্রকল্প নিয়ে সন্দেহ হলে সেটি আটকে দেওয়া হয়। গাড়ি চালক মো. শহিদুল্লাহ ওই প্রকল্পের চুক্তিতে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বিল ও প্রকল্পের ফাইল ছেড়ে দিতে গাড়ি চালক প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে চাপ দেন। কিন্তু তিনি অস্বীকার করায় মো. শহিদুল্লাহ’র নেতৃত্বে দুই জন লাঠি নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তার ওপর হামলা চালান। এ সময় অফিসের কর্মচারী ও কয়েকজন ঠিকাদার তাদের ধরে ফেলেন। পরে তাদের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে গাড়ি চালক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা তার ব্যবহৃত গাড়িতে ১২ হাজার টাকার মালামাল সংযোজন করলেও তার বিল পরিশোধ করেনি। এছাড়া তার গাড়ির জন্য চারটি টায়ার দাবি করেছেন। কিন্তু অবৈধ সুবিধা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রূপসায় তার নানা বাড়ির কাছে মসজিদ উন্নয়নের একটি প্রকল্পের ব্যাপারে তিনি ফাইল ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন, এ নিয়ে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার ঘটনা ঘটেনি।
প্রশসিনিক কর্মকর্তা মাহবুব অভিযোগ করেন, স¤প্রতি ৪০টির বেশি প্রকল্পে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও নানা অনিয়মের কারণে যাচাই-বাছাইয়ের পর তা আটকে দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলোর অধিকাংশই বাস্তবে অস্তিত্ব নেই। এছাড়া দুঃস্থদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সরবরাহ করা এবারের ভ্যানগুলো খুবই নিম্নমানের। এসব ভ্যান গ্রহণ না করতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান তিনি। এসব কারণে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে।
এর আগে মাহাবুবুর রহমান সাতক্ষিরা জেলা পরিষদে প্রশাসনিক কর্মকর্তা থাকাকালিন সেখানকার কর্মচারিদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। এছাড়া তার অপসারনের দাবীতে সে সময় ঝাড়ু মিছিল করা হয়।