1

খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে শতাধিক পাখি হত্যা, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক পাখি হত্যার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের এক চাতাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে জেলা শহরের আপন পাড়া এলাকায় সিটি অটো রাইস মিলে এ ঘটনা ঘটে। পাখি হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দোষী ব্যক্তির বিচার দাবি করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই এলাকার আবুল কাশেমের ‘সিটি রাইস মিল’ নামের চালকলটি কিছুদিন আগে মহেন্দ্রনগর এলাকার মানিক মিয়া নামের এক ধান-চাল ব্যবসায়ী ধান শুকানোর জন্য ভাড়া নেন। গত শুক্রবার কয়েকজন এলাকাবাসী দেখতে পায় ওই চাতালের পাশে কয়েকটি ঘুঘু ও কবুতর মরে পড়ে আছে। প্রথমে তারা এটি নিথক দুর্ঘটনা ভেবে এড়িয়ে যান। কিন্তু পরদিন গতকাল শনিবার সকালে দেখতে পান ঘুঘু, কবুতর, চড়–ই, বাবুই, ঁেপচাসহ নানা প্রজাতির শতাধিক পাখি মরে পড়ে আছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই এলাকার কোহিনুর বেগম বলেন, আমার তিনটি কবুতর ইতিমধ্যেই মারা গেছে আমার মতো আমাদের অনেক প্রতিবেশীর কবুতর মারা গেছে। এলাকাবাসী মোতালেব ও আজিজারসহ অনেকেই জানান ব্যবসায়ী মানিক মিয়া ধান ও শরিষা দানার সাথে বিষ মিশিয়ে চাতালের চারপাশে ছিটিয়ে রাখে। পাখিগুলো উড়ে এসে ওই বিষমাখা খাবার খেয়ে একে একে শতাধিক পাখি মারা যায়। এ ব্যাপারে তারা অভিযুক্ত মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ বিচার দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে মানিক মিয়ার সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ওই চাতালের শ্রমিক আশরাফুলের দাবি চাতালে ধান শুকানোর সময় প্রতিদিনই পাখিগুলো ধান খেয়ে ফেলে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা ধান ভোর থেকেই পাখিগুলো পলিথিন ফুটো করে খায়। সে কারনে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে পাখিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ঘটনা জানার পর পরই সদর থানা পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এছাড়া জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও এসে তদন্ত করেন।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ মকবুল হোসেন জানান, বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের অধীনে। তবে আমরা আহত কয়েকটি পাখিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মৃত কয়েকটি পাখির নমুনা সংগ্রহ করেছি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুইতিং মং জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এভাবে পাখি হত্যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এই ধরনের অপরাধের জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা এবং এক বছর কারাদন্ডের বিধান রয়েছে। তবে এই ঘটনায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মানিক মিয়াকে ৫০হাজার টাকা জনিমানা করা হয়েছে।