শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন




৩ নভেম্বর বাঙালির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়

বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৯

আজ ৩ নভেম্বর (রোববার) জেল হত্যা দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কঙ্কিত অধ্যায়। এই দিন বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান কারাগারের অভ্যন্তরে আরেক জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশি-বিদেশি চক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে।

এর কিছুদিন পরই ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আরেকটি বর্বর হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতাকে।

স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর আজীবন রাজনৈতিক সহকমী, তার অবর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেন সেই জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে জেলখানার অভ্যন্তরে গুলি করে ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযু্দ্ধের পরাজিত শত্রুরা এদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে দেশি-বিদেশি এই চক্রটি জাতির পিতাকে হত্যা করে।

এরপর খুনি মোশতাকের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী ওই চক্র এদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। বাংলাদেশ যাতে আর এগিয়ে যেতে না পারে, স্বাধীনতা যাতে ব্যর্থ হয়, বাংলাদেশ যাতে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয় সেই চক্রান্ত করে তারা। এরই অংশ হিসেবে এবং এদেশে যাতে কোনোদিন স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র থেকেই জেলখানার অভ্যন্তরে এই হত্যাকালণ্ড তারা সংগঠিত করে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থেকে এই চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী। আর এ এইচ এম কামরুজ্জামান খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, আন্দোলন-সংগ্রামে এই চার নেতা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোদ্ধা হিসেবে তার পাশে থেকেছেন। বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে যখন কারাগারের বন্দি রাখা হয়েছে তখন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে এই চার নেতা আন্দলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন।

ঘাতক চক্রের লক্ষ্য ছিলো বাঙালিকে নেতৃত্ব শূন্য করে বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানের পদানত করে মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া। এর কারণে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানে আটকে রাখার পর যারা বঙ্গবন্ধুর হয়ে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন সেই চার নেতাকেও বঙ্গবন্ধুর মতো হত্যা করা হয়।

মানবতাবোধের চরম নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হচ্ছে ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। দেশের আপামর জনতা যাদের নেতৃত্বে ও নির্দেশে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে মাত্র ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এদেশেকে স্বাধীন করেছিল।

যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে এদেশের জনগণকে একত্রিত করে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করে বিজয়ের পতাকা উঠিয়ে ধরেছে সেই চার নেতাকে চরম নির্মমতার স্বাক্ষর রেখে ৩ নভেম্বরে হত্যা করা হয়।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765