1

হিজড়াদের উন্নয়নে এডভোকেসি সভা এফপিএবি’র

সমাজে পিছিয়ে থাকা হিজড়া জনগোষ্ঠীদের উন্নয়নে এডভোকেসি সভা করেছে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)। সভায় প্রতিনিধিরা বলেন, আমাদের দেশে হিজড়া জনগোষ্ঠী বেশ অবহেলিত। বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা নিতান্তই অপ্রতুল। সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে কিছু হিজড়াকে প্রশিক্ষণ বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলেও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁরা কর্মস্থলে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। আবার অনেক হিজড়া তাঁদের জন্য রাষ্ট্রের যে সুযোগ-সুবিধা আছে তা জানেনই না।

মঙ্গলবার সকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে এফপিএবি’র জাতীয় কার্যালয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান। সভায় এফপিএবি-র কর্মকর্তারাসহ ইউএসএআইডি, সেরাক-বাংলাদেশ, ব্রাক, পদ্মকুঁড়ি, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, টিডিএইচ নেদারল্যান্ড, সুস্থ জীবন, লাইটহাউস, সাদাকালো, বাংলাদেশ সেক্স ওয়ার্কার নেটওয়ার্ক, অবয়ব ও বিডিএইচ নেপাল-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, হিজড়াদের উন্নয়নে তাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ শেষে যে অর্থ ঋণ হিসেবে তাঁদের দেওয়া হয় তা খুবই সামান্য। যা দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করা যায় না।

সভায় বক্তারা আরো বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে হিজড়া জনগোষ্ঠী স্বীকৃতি পেলেও তা সাংবিধানিকভাবে পূর্ণতা পায়নি। আবার যতটুকু স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ব্যাংক ঋণ দেওয়ার বিধান থাকলেও তাঁরা ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না। তাঁরা বলেন, প্রত্যেকেরই যার যার অবস্থান থেকে দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের পরিবর্তন করা প্রয়োজন। তাছাড়া প্রতিবন্ধী কল্যাণ তহবিলের মত হিজড়াদেরও একটি কল্যাণ তহবিল থাকা প্রয়োজন বলে সভায় আলোচকরা মত প্রকাশ করেন। বক্তারা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার এবং শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। হিজড়াদের নিয়ে বিভিন্ন সভায় আলোচনা হয় কিন্তুু আলোচনার বিষয়বস্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা নীতিনির্ধারকদের নিকট পৌঁছায় না। সুতরাং আজকের সভার সুপারিশমালা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও নীতিনির্ধারকদের নিকট পৌঁছাবে বলে সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

উল্লেখ্য, এফপিএবি হিজড়া জনগোষ্ঠীসহ সকল সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে কাজ করে আসছে। আলোচনার মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়নের বিষয়ে সভায় বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়।