1

হতদরিদ্রের ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন ইউপি সদস্য

গোপালগঞ্জে ৩০ জন হতদরিদ্রের ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষীর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাকির শেখ হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে টাকা ফেরৎ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জায়গা আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের আওয়াতায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বরাদ্ধকৃত ঘর ও গভীর নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গত বছরের ডিসেম্বরে ওই ইউপি সদস্য ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩০ জন হতদরিদ্রের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে অন্তত ৪ লাখ টাকা আদায় করেন।

এতে বলা হয়, ছয় মাস অতিবাহিত হলেও ইউপি সদস্য ঘর ও গভীর নলকূপ দিতে ব্যর্থ হন। ঘর ও টিউবওয়েলের পরিবর্তে টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে তাদের হয়রানি করতে থাকেন তিনি।

ননীক্ষীর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনি শেখ বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে জাকির মেম্বর আমাদের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে দু’ ভাইয়ের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমরা দিন মজুর ধার দেনা করে মেম্বরকে এ টাকা দিয়েছি। এ রকম আরো অন্তত ২৮ জনের কাছ থেকেও সে টাকা নিয়েছে। এখনও তিনি আমাদের ঘর দিতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘টাকা ফেরৎ চাইলে নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন জাকির। হয়রানি করছেন। এ কারণে টাকা ফেরৎ পেতে আমরা ৩০ হতদরিদ্র পরিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি।’

ইউপি সদস্য জাকির শেখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ১৬ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তবে সবাই ১৫ হাজার করে টাকা দেয়নি। কেউ ৫ শ’, ১ হাজার টাকা কম দিয়েছে।

তিনি বলেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের প্রকৌশলী আল মামুন আমার ওয়ার্ডের লোকজনদের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলেছিল। তার কথা বিশ্বাস করে গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে টাকা তুলে তাকে দিয়েছিলাম। মামুন স্যার টাকা ফেরৎ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। স্যার টাকা দিলে আমি গ্রামের লোকজনের টাকা ফেরৎ দিয়ে দেব। টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি আমার ইউপি চেয়ারম্যানকেও বলেছি।

ননীক্ষীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিনা বলেন, আমি শুনেছি জাকির মেম্বার কিছু লোকের কাছ থেকে ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। আমি আমার পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে সভা করে অনেক আগেই ঘর বাবদ কোন টাকা না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। জাকির আমাকে এ বিষয় আগে জানায়নি। এখন সাধারণ মানুষের টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে ।

মুকসুদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের প্রকৌশলী আল মামুনের মোবাইলে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। এছাড়া তাকে এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই অফিসে কয়েকজন কর্মরত ব্যক্তি জানান, প্রকৌশলী আল মামুনের এ ধরনের টাকা নেয়ার অভ্যাস রয়েছে।

মুকসুদপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাসলিমা আলী বলেন, এই বিষয় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।