1

সুস্থ সন্তানের বাবা হতে চাইলে মদপান ত্যাগ করুন

ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলজির (ইএসসি) একটি জার্নাল ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ প্রিভেনটিভ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্তান জন্মদানে আগ্রহী বাবা-মায়েদের গর্ভধারনের ছয় মাস আগে থেকেই মদপান ছেড়ে দেওয়া উচিত। আর নয়তো তাদের সন্তান জন্মগতভাবেই হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হবে।

সন্তান গর্ভেধারনের তিন মাস আগেও যদি কোনো বাবা-মা মদ পান করেন তাহলে তাদের সন্তানের হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে জন্ম গ্রহণ করার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমন ক্ষেত্রে বাবার মদপানের ফলে সন্তানের হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৪% বেড়ে যায়। আর মায়ের মদপানের ফলে এই ঝুঁকি বাড়ে ১৬%।

আর যেসব বাবা-মা বেশি মদপান করেন তাদের সন্তানের হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মানোর ঝুঁকি আরো বেশি বেড়ে যায়। এমন ক্ষেত্রে বাবার অতিরিক্ত মদপানের ফলে সন্তানের হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় ৫২%, যা মায়ের বেলায় ১৬%।

অতিরিক্ত মদপানের ফলে যে শুধু সন্তানই হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে তা নয় বরং বাবা-মার নিজেদেরও স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি হবে।

চীনের চাংশা প্রদেশের সেন্ট্রাল সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিয়াংগিয়া স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এর গবেষক ড. জিয়াবি কিন বলেন, অতিরিক্ত মদপান শুধু সন্তানের জন্যই নয় বরং সন্তান জন্মদানে আগ্রহী বাবা-মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও বিপজ্জনক।

ড. কিন বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, বাবা হতে চাওয়া পুরুষদের জন্য তার নারীকে গর্ভবতী করার অন্তত ছয় মাস আগে থেকেই মদপান ছেড়ে দেওয়া উচিত। আর নারীদের জন্য গর্ভধারনের এক বছর আগে থেকেই মদপান ছেড়ে দেওয়া উচিত। এবং সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় মদপান থেকে বিরত থাকা উচিত।

প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ শিশু হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর এই সমস্যা পরে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়। এবং অকাল মৃত্যুর দিকেও ঠেলে দেয়।

ফোয়েটাল অ্যালকোহল স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার (এফএএসডি) নামের ভ্রুণগত সমস্যা সৃষ্টির জন্যও দায়ী অ্যালকোহল। এফএএসডি সমস্যা নিয়ে জন্ম নেওয়া প্রতি চারজন শিশুর একজনই জন্মগতভাবে হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মায়। আর এ থেকেই প্রমাণিত হয় অ্যালকোহল এই সমস্যার জন্য দায়ী।

১৯৯১ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জন্মগতভাবে হার্টের সমস্য নিয়ে জন্ম নেওয়া ৪১,৭৪৭ জন শিশু এবং হার্টের সমস্যা নেই এমন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫৮৭ জন শিশুর ওপর পরিচালিত ৫৫টি গবেষণার তথ্য-উপাত্ত সমন্বয় করে সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।