1

সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে উৎকণ্ঠা, বিজিবির টহল জোরদার

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার তিনদিকই ভারতের আসাম রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকা। সুরমা-কুশিয়ারা নদী দিয়েই দুই দেশের সীমানা আলাদা রয়েছে। গত শনিবার আসাম রাজ্যের নাগরিকদের নামের তালিকা প্রকাশের পর পুরো জকিগঞ্জ উপজেলায় উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। ভারত থেকে জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক মানুষ পুশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কেউ যাতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও বিশেষ নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনকভাবে কাউকে চলাফেরায় দেখতে পেলেই বিজিবি সদস্যরা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচয় নিশ্চিত করছে। শুধু বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ লোকজনকেও সতর্ক করা হয়েছে। সীমান্তের লোকজনের কড়া নজর এখন ভারতের আসাম রাজ্যের দিকে। যদিও এখন পর্যন্ত জকিগঞ্জের কোন সীমান্ত এলাকা দিয়েই অনুপ্রবেশ চেষ্টার খবর পাওয়া যায়নি।
এরপরও সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও লোকজনকে সর্তক বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোন তৎপরতা দেখতে পেলে যাতে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে জানানো হয় সেই বার্তাও দেয় হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর আসামের বাদ পড়া নাগরিকরা আপিলের সুযোগ পেয়েছেন। এ জন্য অনুপ্রবেশের আশঙ্কা আপাতত তেমন নেই। তবে, বাদ পড়া নাগরিকদের আপিল শেষে রায় প্রকাশের পর আসামে অবস্থার অবনতি হলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের কিছুটা চেষ্টা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আগাম তথ্য রয়েছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জানান, কোনোভাবেই আসামের লোকজনকে যাতে পুশব্যাক করা না হয় সে দিকে আমরা সতর্ক আছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ জানিয়েছেন, আমরা সর্তক রয়েছি। অনুপ্রবেশের বিষয়ে কেউ কোন তৎপরতা দেখতে পেলে অবহিত করতে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আবু নাসের জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সব সময় সর্তক থাকি। তবে, ভারতের আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকাপঞ্জি প্রকাশের পর আমরা আগের চাইতে অনেক বেশি তৎপর রয়েছি। সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদেরকে বলে রাখা হয়েছে, কেউ কোন তৎপরতা দেখতে পেলে যাতে দ্রুত আমাদেরকে জানায়। আমরা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি।

বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের পরিচালক (জকিগঞ্জ) লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিজিবি সবসময় সতর্ক আছে। শনিবার আসামে এনআরসি প্রকাশের পর থেকে জকিগঞ্জ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিজিবি কড়া সতর্ক রয়েছে। এখন পর্যন্ত পুশব্যাক করার মতো কোনো খবর আমাদের কাছে আসেনি। কখনো পুশব্যাকের চেষ্টা করলে প্রতিরোধ করতে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।