1

সত্তর জন হজযাত্রীর টাকা মেরে পালাতে গিয়ে ধরা প্রতারক তোহা

সত্তরজন হজযাত্রীর টাকা মেরে পালাতে গিয়ে গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ল এক প্রতারক। তার নাম শামসুদ্দিন তোহা। সোমবার দুপুরে রাজধানীতে গোয়েন্দা পুলিশের জালে ধরা পড়ে সে। ঢাকার আশকোনা হজক্যাম্পে আটক অবস্থায় তাকে রাখা হয়েছে । সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে গত তিনদিন ধরে কোনো অবস্থাতেই হজ অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে ধরা দেননি তিনি। পরে আজ হজ অফিসের রিপোর্টের ভিত্তিতে গোয়েন্দা জালে আটকে যান এই প্রতারক। তার বাড়ি বাগেরহাট জেলা সদরে।

এদিকে সোমবার সকাল থেকেই স্বদেশ ওভারসীস’ এবং ‘বিদেশ ভ্রমণ’ নামের দুটি হজ এজেন্সির মোট ৭০ জন হজযাত্রী হজক্যাম্পে এসে জড়ো হন। তারা সব টাকা পরিশোধ করার পরেও কেন এখনো ভিসা পাচ্ছেন না তা জানার জন্য হজ ক্যাম্পের পরিচালকের কাছে গিয়ে নালিশ জানান। পরে তাদের সাথে আসা গ্রæপ লিডার আমিরুল ইসলাম, রাকিবুর ইসলাম, আবুল হাসনাত ও হেমায়েত উদ্দিনকে আটক করা হয়। তবে এজেন্সির প্রতারণার মূল সহযোগী বাপ্পী নামের একজনকে প্রথমে আটক করা হলেও পরে তিনি কৌশলে হজ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরে হজ অফিসের রিপোর্টের ভিত্তিতে তোহাকে খোঁজ শুরু করে গোয়েন্দা পলিশ।
এদিকে এই দুটি এজেন্সির প্রায় ৭০ হজযাত্রীর হজযাত্রা এখনো অনিশ্চিত। যদিও ভিসা করার সময় আর মাত্র একদিন বাকি আছে। এজেন্সি মালিক এখনো এই হজযাত্রীদের মক্কায় ও মদিনায় বাড়ি ভাড়ার ‘মোফা’ সংগ্রহ করেনি।
আশকোনার হজ অফিস সূত্র জানায়, স্বদেশ ওভারসীস (লাইসেন্স নং ১৫৩১) এবং বিদেশ ভ্রমণ (লাইসেন্স নং ৭০১) এ দুটি এজেন্সির মালিক কেউই এবছর হজে কোন হজযাত্রী পাঠাচ্ছেন না। তবে দুটি এজেন্সির লাইসেন্সই তোহা নামের এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দিয়েছেন এজেন্সির মূল মালিকরা। ফলে বিনা লাইসেন্সে ফটকা কারবারীর মতো কিছু দালাল (এজেন্সীর ভাষায় বলা হয় গ্রুপ লিডার) নিয়োগ করে বড় অংকের মুনাফা করা ফন্দি করেছিল তোহা নামের একজন ট্রাভেল ব্যবসায়ী; কিন্তু শেষ পর্যন্তা তাকে ধরা পড়তে হলো। এ ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন হজযাত্রীরা।
সূত্র আরো জানায়, স্বদেশ ওভারসীসের নামে ১৬৭ জন হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন। আর বিদেশ ভ্রমণের নামে নিবন্ধিত হয়েছেন ১২৮ জন হজযাত্রী। ৭০ জনের ভিসা ও বাড়ি ভাড়া হয়নি।
স্বদেশ ওভারসীস এর মালিক খায়রুল ইসলাম ঠাকুর ও বিদেশ ভ্রমণের মালিক উমর ফারুক এবং এই দুটি এজেন্সির লাইসেন্স ব্যবহার করে অনিয়মের মূল হোতে তোহাকে সোমবারের মধ্যে ধরতে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা চায় ঢাকা হজ অফিস। পরে দুপুর আড়াইটায় গোয়েন্দাজালে আটকা পড়েন ত্বোহা। গোয়েন্দারা তাকে ট্রেস করেছেন বুঝতে পেরে এক পর্যায়ে তিনি নিজে এসেই ধরা দিয়েছেন হজ অফিসে।
সুত্র জানায়, আটক শামসুদ্দিন তোহা খুলনা ও বাগেরহাটে সৌদী-বাংলা ট্যাভেল লিমিটেড নামের এজেন্সী খুলে সাধারন মানুষের সাথে দীর্ঘদিন প্রতারণা করে আসছিল। এবছর তার প্রতারণা প্রকাশ পায়।