শরীয়তপুর পৌর এলাকার শরীয়তপুর-কানারবাজার সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ নিয়ে এলাকাবাসির মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে। নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বার বার চিঠি দিলেও তোয়াক্কা করছেনা ঠিকাদার। একদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে পৌরসভা চিঠি দেয়ার পর খারাপ ইট সরিয়ে নিয়ে ভাল ইট দিয়ে সিডিউল মোতাবেক কাজ করছি। অন্যদিকে মেয়র বলছেন খারাপ ইট সরিয়ে না নিলে মোবাইল কোর্ট দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শরীয়তপুর পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয়রা জানায়, শরীয়তপুর পৌর এলাকার শরীয়তপুর (পালং উত্তরবাজার)-কানার বাজার সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। ইতোপূর্বে পৌরসভা দরপত্র আহবান করে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান আরকেএসই জেবিকে কার্যাদেশ প্রদান করেছে। এ কাজের জন্য ব্যয় হবে ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা । প্রায় ৩ মাস যাবত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজ শুরু করে। এ কাজে ব্যবহৃত ইটের খোয়া এতই নিম্নমানের যে চুলার মাটির চেয়ে ও খারাপ। পুরো রাস্তা জুরেই ৩নং ইট দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার। নিম্নমানের ইট বালু দেখে রাস্তার পাশের পৌর নাগরিকরা প্রতিবাদ করে ও কোন সুরাহা হচ্ছেনা। পৌরবাসি বিষয়টি পৌর কতৃপক্ষের গোচরিভুত করলে পৌরসভা থেকে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে খারাপ নির্মান সামগ্রী তথা ৩নং ইট সরিয়ে নিয়ে ১নং ইট দিয়ে কাজ করার জন্য বার বার চিঠি দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জেলা ছাত্রলীগের যুগ্নআহবায়ক রাশেদুজ্জামান ভুলু কোন তোয়াক্কাই করছেনা। সে প্রভাবশালীদের খুটির জোর দেখিয়ে নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হলে রাস্তাটি টিকসই হবেনা। কিছুদিন যেতে না যেতেই রাস্তাটি ভেঙ্গে যাবে। জরুরী ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে সরকারের বিরাট একটি আর্থিক গচ্ছা যাওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান।
পৌর এলাকার বাসিন্দা ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আলতাফ হোসেন (খোকন) শাহ বলেন, কাজের মান অত্যন্ত নিম্মমানের। আমরা প্রতিবাদ করলে ও ঠিকাদার কোন তোয়াক্কা করেনা। বরং এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে উল্টো ভয় দেখায়।
শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান রাজ্জাক মোল্যা বলেন পৌর মেয়র সরেজমিন রাস্তায় তদন্ত করতে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নির্মান সামগ্যী এতই নিম্মমানের যে কোন নাম্বারের মধ্যে পড়ে না।
এ ব্যাপারে আরকে এস ই জেবি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাসেদুজ্জামান ভুলু বলেন, পৌরসভা আমাকে চিঠি দেয়ার পর আমি খারাপ ইট সরিয়ে নিয়ে ১ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করছি।
এ ব্যাপারে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী লক্ষীকান্ত হালদার বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও ঢাকা থেকে আগত উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে কে সাথে নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে খারাপ ইট সরিয়ে নিয়ে ১ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করার জন্য বার বার চিঠি দেয়া হয়। ঠিকাদার বলছেন সরিয়ে নিবে। সরিয়ে নেয়া না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শরীয়তপুর পৌর মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, গত শুক্রবার আমি সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে অত্যন্ত নিম্মমানের ইট দেখতে পাই। আমি নির্দেশ দিয়েছিখারাপ ইট সরিয়ে নিতে। জরুরী ভিত্তিতে খারাপ ইট সরিয়ে না নিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কার্যকরী ব্যবস্থা নিব।