1

যৌন হয়রানির অভিযোগে জাবি শিক্ষক সাময়িক বহিষ্কার

যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে সাময়িকভাবে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে কতৃপক্ষ। গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম তার বিশেষ ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, “অভিযোগকারী ছাত্রীর অভিযোগ আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল তদন্ত কাজ শুরু করেছে এবং একটি সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশে শিক্ষক সানওয়ার সিরাজকে তদন্ত চলাকালে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে সাময়িকভাবে বিরত থাকতে বলেছে। উপাচার্য এই সুপারিশে অনুমোদন দিয়েছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আক্তার বলেন, “আমরা যৌন হয়রানির অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তদন্ত কাজের শুরুতেই সেলের বিধি অনুযায়ী আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে সাময়িকভাবে বিরত থাকার সুপারিশ দিয়েছি।” এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেননি শিক্ষক সানওয়ার সিরাজ। যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তিনি কারও ফোন ধরছেন না।

উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিজ বিভাগের শিক্ষক সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী। বিচার চেয়ে বিভাগের সভাপতির কাছে একটি অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। পরে অভিযোগ দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ওই শিক্ষকসহ বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষক কর্তৃক ‘অব্যাহত হয়রানির’ শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা।

তার কয়েকজন সহপাঠী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় এক বছর আগের এই নিপীড়নের ঘটনা ঘটলেও কয়েকবার মৌখিক অভিযোগ দিয়ে কোনো বিচার পাননি ওই ছাত্রী। বরং শিক্ষক সানোয়ার সিরাজের ‘অব্যাহত হয়রানির’ ফলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি ‘২৬টি ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা’ করেন বলেও তার এই সহপাঠীরা জানান।

তারা বলেন, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। এরপর ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির এই ঘটনা প্রকাশ্যে এলে তা নিয়ে সরব হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।