1

যে কারণে প্রেমিককে ৫ টুকরো করেন এই নারী শাহনাজ

নাম তার শাহনাজ, বয়স ৫০। প্রেম করতেন নিজের চেয়ে ১৮ বছরের ছোট সজীব নামের এক তরুণের সঙ্গে। মূলত পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এই দু’জন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সজীবের খণ্ড খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সায়েদাবাদের কে এম দাস লেনের ৬ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন শাহনাজ ও বাসের টিকিট কাউন্টার কর্মী ৩২ বছরের সজীব।
এদিকে, স্ত্রী নিখোঁজ থাকায় মঙ্গলবার ওয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শাহনাজের স্বামী।

বৃহস্পতিবার সকালে শাহনাজ তার স্বামীকে ফোন দিয়ে বলেন তিনি বিপদে আছেন। এ ফোন পেয়ে স্বামী পুলিশ নিয়ে হাজির হন ওই বাসায়। এসময় দেখতে পান সজীবের ৫ খণ্ড মরদেহের পাশে বসে আছে তার স্ত্রী শাহনাজ।

জানা গেছে, সজীবের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন শাহনাজ। একইসঙ্গে তাদের মধ্যে অর্থ লেনদেনের ঘটনাও ছিল। স্বামী বৃদ্ধ হওয়ায়, ১৮ বছরের ছোট প্রেমিক সজিব হাসানকে জুটিয়ে নেন ৫০ বছর বয়সী এই নারী।

শাহনাজের সঙ্গে পরকীয়া থাকাকালীন তার মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সজীব। সেই সঙ্গে তাদের মধ্যে অর্থ লেনদেন নিয়ে তর্কবিতর্ক হওয়ায় যুবক বয়সী প্রেমিকের বুকে ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করেন এই দুর্ধর্ষ নারী। পরে প্রেমিকের হাত পা কেটে ৫ টুকরো করেন তিনি। দুই হাতের অংশ এবং দুই পায়ের অংশ বাথরুমে ঢুকিয়ে রাখেন এবং মাথাসহ শরীরের বাকি অংশ রুমের মধ্যেই মেঝেতে উপুড় করে ফেলে রাখেন। যা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। ওই বাসায় গিয়ে একই অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর ওয়ারী থানাধীন ১৭/১ কে এম দাস লেনস্থ হোল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায়।

ডিএমপি’র ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, বাসার বাথরুম থেকে প্রেমিকের খণ্ড-বিখণ্ড হাত, পা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমের সম্পর্কের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি।

ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কামরুল ইসলাম জানান, ওয়ারী থানাধীন ১৭/১ কে এম দাস লেন হোল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় ঘটনায় নিহত সজীব হাসানকে হত্যা করা হয়। প্রেমিকা শাহানাজ সজীবের ছুরি দিয়ে বুকের নিচে পাড় দেয়। পরবর্তীতে তার দু’হাত এবং দু’পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ৫/৬ বছর আগে থেকে সজীব সাথে শাহানাজের অবৈধ সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ২ দিন আগে হত্যাকারী শাহানাজ তার প্রকৃত স্বামীর ঘর সংসার ছেলে মেয়ে রেখে স্বর্ণাংলকার কাপড় চোপড় ও টাকা পয়সা এবং লাগেজ নিয়ে বাড়ি হতে বের হয়ে সজীবের সঙ্গে দেখা করে এবং তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সজীবের বাসায় অবস্থান করতে শুরু করে।

ওই নারী পুলিশের কাছে বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে সজীব তার টাকা পয়সা ও স্বর্ণাংলকার নিয়ে বিক্রি করতে চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরেই সজীব তাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করতে চাইলে ছুরি কেড়ে নিয়ে উল্টো তার বুকের নিচে পেটের উপরি ভাগে পাড় দেন শাহনাজ। হত্যাকারী শাহানাজ প্রেমিক সজিবের তুলনায় শারীরিক গঠনে খুবই ভালো। হত্যা শেষে ছুরি দিয়ে সজীবের দু’হাত, দু’পা বিছিন্ন করা হয়। এ কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও শীল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ওই নারীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সজীবের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ড থানার নারায়নকান্দা (বিশ্বাসপাড়া) গ্রামে।