1

মোরেলগঞ্জে হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই নেতা হত্যার ঘটনায় দলীয় ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান ও পরিষদের ৫ মেম্বরসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল
করেছে পুলিশ। 

দীর্ঘ ৮ মাস তদন্ত শেষে আজ বুধবার বাগেরহাট আমলী আদালতে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা থানার ওসি (তদন্ত) ঠাকুর দাস মন্ডল চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বাদী মো. ফরিদ আহম্মেদ এ সময় তার সাথে ছিলেন। 

চার্জশিটে মোট ৫৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়
১৯ জন। যার প্রধান অভিযুক্ত হচ্ছেন দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ
দলীয় চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকির(৫৫)। অপর অভিযুক্তদের মধ্যে পরিষদের ৫
জন মেম্বর, ১ জন দফাদার, ১ জন চৌকিদারসহ একই দলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। 

দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে গত বছরের ১লা অক্টোবর বেলা ৩টার দিকে দৈবজ্ঞহাটি
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনছার আলী দিহিদার (৫২) ও আওয়ামী
লীগ নেতা শুকুর শেখকে (৪০) বাড়ি থেকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে পিটিয়ে,
কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।

মো. আনছার আলী দিহিদারকে সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময়ের ফাইল ছবি।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা আনছার আলী ও শুকুর শেখের হত্যা মিশনে সরাসরি অংশ নেয় ১৯ জন। যার নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান শহিদুল ফকির। এ জোড়া হত্যাকাণ্ডে মোট ৫৮ জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। মামলার বাদী নিহত শুকুর শেখের ভাই ফারুক আহম্মেদ দাখিলকৃত চার্জশিটে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ঠকুর দাশ মন্ডল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,
জোড়া হত্যার ঘটনায় থানা ও  কোর্টে পৃথক ৩টি মামলায় মোট ৭৪ জনকে আসামি করা
হয়েছিল। তদন্তে কিছু বাদ পড়েছে, কয়েকজনের নাম যুক্ত হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ
হত্যা মামলার তদন্তে স্থানীয় ৫৪ জনসহ মোট ৮২ জনের স্বাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। 

ঘটনার দিন (১ অক্টোর, ২০১৮) থেকে তদন্ত চলাকালে পুলিশ এ মামলার আলামত
হিসেবে একটি সিঙ্গেল শর্ট এলজি, ৬ চেম্বারের একটি রিভলবার, ১২ বোরের একটি
শর্টগান, শরীর থেকে বের করা গুলির দুটি ধাতব পিলেট, ১২ বোরের ২ রাউন্ড
ফায়ার্ড কার্তুজ, ১ রাউন্ড ৯ এমএম ক্যালিবারে ফায়ার্ড কার্তুজ, রক্তমাখা
দাও, লাঠি, ছোরা, কুড়ালসহ অনেক আলামত জব্দ করেছে। 

মামলার প্রধান আসামি শহিদুল ফকিরসহ ২৬ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উচ্চ আদালত থেকে সাময়িক জামিনে আছেন ১ জন ও পলাতক ৩১ জন। 

মামলাটি তদন্তকালে জেলা পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় সার্বক্ষণিক
মনিটরিং করেছেন এবং থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম তদন্তে সহযোহিতা করেছেন
বলেও তদন্তকারি কর্মকর্তা জানান।