বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন




‘মৃত্যুর পর আমি এই দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না’

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  • প্রকাশ: শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০১৯

দিনাজপুরের পর এবার পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ছেলের চাকরি না হওয়ায় আরেক মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করেছেন। জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদনে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান গ্রহণে অস্বীকৃতির পাশাপাশি নিজ পরিবারকেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফনের নির্দেশ দেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। আটোয়ারী উপজেলার কাটালী মীরপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন গত বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবর এই চিঠি প্রেরণ করেন। এছাড়া ওই চিঠির অনুলিপি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরেও প্রেরণ করেন তিনি।

চিঠিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলার ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে সলিমউদ্দিনের ছেলে সাহিবুল ইসলাম দাড়খোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে আবেদন করে এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু ওই নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধার কোটা না মেনে নিয়োগ কমিটি সাদেকুল ইসলাম নামে অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করে বলে অভিযোগ করেন ওই মুক্তিযোদ্ধা।

পরে এই অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সহকারি জজ আদালতে (আটোয়ারী) একটি মামলা করেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় একটি প্রভাবশালী মহল মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাদী সাহিবুল ইসলাম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে দাবি করে ওই নিয়োগে অনিয়মের বিচার না হলে ওই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিতে নিষেধ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন জানান, আমি দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা। ছেলের চাকরির জন্য ঘুষ দিতে পারিনি বলে ওরা আমার ছেলেকে চাকরি দিলো না। আমার ছেলে যোগ্য প্রার্থী ছিলো। সে আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারপরও তার চাকরি হলো না। যারা টাকা দিয়েছে তাদের চাকরি হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদে মামলা করেছি বলে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। এমন অনিয়ম যদি দেখতেই হবে তবে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম কেন? এসব ঘটনার বিচার না হলে মৃত্যুর পর আমি এমন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের দ্বারা আমি রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না।

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, আমি এখনো এরকম কোনো কাগজ পাইনি। অভিযোগের কাগজ পেলে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা তার ছেলের চাকরি হয়নি বলে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। তিনি সেখানে বলেছেন যে অনিয়মের বিষয়টি বিচার না হলে তিনি মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না। বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো বিষয়টি।

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765