1

ভ্যাটের কারণে দেশি ব্র্যান্ডের পোশাকের দাম বেড়েছে

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্র্যান্ডের পোশাক বিক্রিতে ভ্যাট বা মূসক (মূল্য সংযোজন কর) ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দেশি ফ্যাশন হাউসের পোশাকের দাম বেড়েছে। ভ্যাটের কারণে দাম বাড়ায় ভারত, পকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আইনি-বেআইনি পথে আসা পোশাকের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছে দেশি ব্র্যান্ডের পোশাক। ঈদুল আজহার আগে দেশি পোশাকের দাম বাড়ায় সংশ্লিষ্টরা লোকসানে পড়ার আশঙ্কা করছেন।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আড়ং, সাদাকালো, রং, নিপুণ, অঞ্জনস, কে-ক্রাফট, বিবিয়ানা, অন্য মেলা, দেশাই, যাত্রা, লারিভ, নাবিলা, ফড়িং, স্টিচের শোরুমে (বিক্রয় কেন্দ্রে) গিয়ে দেখা যায়, ১৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর দিন থেকে দেশি ব্র্যান্ডের দাম বেড়েছে। বাড়তি দামে পোশাক কিনতে রাজি নয় অনেকে। তারা আমদানীকৃত পোশাক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্রয়কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।

দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোর সংগঠন ফ্যাশন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এবং সাদাকালো ফ্যাশন হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজহারুল হক আজাদ বলেন, ‘ক্রেতার পছন্দ প্রাধান্য দিয়ে দেশি ব্যান্ডের পোশাক তৈরি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকি ভালো কাপড়, পাকা রং, উন্নত সুতা সব কিছুতে। এত খরচ করে একটি পোশাক ন্যূনতম লাভে বিক্রি করলেও আমদানীকৃত পোশাকের সঙ্গে দামে পেরে উঠি না। কারণ প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাই পথে রাজস্ব না দিয়ে আনা পোশাক অনেক কমে বিক্রি হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘দুই ঈদে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হয়। সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময়ে ভ্যাটের কারণে দাম বাড়ায় বিক্রি কমেছে। এবার ভ্যাটের কারণে লোকসানের আশঙ্কা আছে।’

মিরপুর-১-এর আড়ংয়ের শাখায় গিয়ে দেখ যায়, কাউন্টারে একটি প্ল্যাকার্ডে লিখে রাখা হয়েছে বর্তমানে ভ্যাটের হার ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এখানকার বিক্রয়কর্মী নাদিয়া জাহান বলেন, ‘বাজেটে ভ্যাট বাড়ানোয় আড়ংয়ের সব পোশাকের দাম বেড়েছে। এতে ক্রেতারা বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করছেন।’

আড়ংয়ের এ শাখায় বোনের বিয়ের শাড়ি কিনতে আসা রাজিয়া হাসান বলেন, ‘দেশি ব্র্যান্ডের পোশাক যাঁরা পরেন তাঁরা সাধারণত আমদানি করা রং-চংয়ের পোশাক পরতে পছন্দ করেন না। আমরা বিয়ের জন্য প্রায় ২০টি শাড়ি কিনব। এতে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করায় আমাদের ১০ হাজার টাকার বেশি দাম দিতে হচ্ছে।’

জামদানি পল্লী থেকে গৃহিণী সাবিনা ইয়াসমিন শাড়ি কেনার পর বলেন, ‘বাজেট পেশের আগে লাল জমিনে সাদা সুতা আর সোনালি জরির সূক্ষ্ম কাজের জামদানি শাড়ি কিনেছি সাত হাজার ৪০০ টাকায়। আমার বোন কানাডায় যাবে। আমার শাড়িটি দেখে তার পছন্দ হয়েছে। আমি একই শাড়ি কিনতে এসে দেখি দাম বেশি।’

লালমাটিয়া আড়ংয়ে চার বন্ধু দল বেঁধে একসঙ্গে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছে। তাঁদের একজন ব্যবসায়ী মাসুম রহমান বলেন, ‘সামনে কোরবানির ঈদ। আমরা কয়েক বন্ধু মিলে আড়ং থেকে পাঞ্জাবি কিনব বলে এসেছি। চারটি পাঞ্জাবি চেয়েছে ১৮ হাজার টাকা। খোঁজ নিয়ে জানলাম ভ্যাটের কারণ দেখিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে।’