1

ভারতের মুসলিম নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা ৪৯ বিশিষ্টজনের নামে মামলা

ধর্মকে হাতিয়ার করে দলিত বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হিংসার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি লিখেছিলেন দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ বার ওই বিশিষ্টদের বিরুদ্ধেই দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু হয়েছে বিহারের এক আদালতে। আবেদনকারীর দাবি, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এ কাজ করেছেন ওই বিশিষ্টেরা। ওই আবেদনের শুনানি হবে আগামী ৩ অগস্ট।

শনিবার বিহারের আদালতে এই আবেদন করেছেন সুধীর কুমার ওঝা নামে এক আইনজীবী। মুজফ্ফরপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করা এক পিটিশনে তিনি দাবি করেছেন, ‘দেশের ভাবমূর্তি ধুলোয় মেশাতেই এ কাজ করেছেন ওই ৪৯ জন। প্রধানমন্ত্রীর চমকপ্রদ সাফল্যকে খাটো করে দেখানোই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ দেশদ্রোহিতা ছাড়াও দেশের সার্বিক অখণ্ডতা নষ্ট করা তথা ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগও করেছেন সুধীর। পাশাপাশি, ওই বিশিষ্টজনেরা যে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতার বশবর্তী হয়েই এ কাজ করেছেন, তা-ও দাবি করেছেন তিনি।
আদুর গোপালকৃষ্ণন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শ্যাম বেনেগাল, রামচন্দ্র গুহ, বিনায়ক সেন, মণিরত্নম, অপর্ণা সেন, গৌতম ঘোষ, শুভা মুদ্গল, অনুরাগ কাশ্যপ, কৌশিক সেন, কঙ্কনা সেনশর্মা, রূপম ইসলাম-সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীকে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় ধর্মের নামে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে হিংসার রাজনীতির। বেড়েছে সংখ্যালঘু তথা দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজনের উপর গণপিটুনির ঘটনা, গুজবের জেরে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বহু মানুষকে। দলিত বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর মানুষের উপর এ ধরনের ঘৃণাপ্রসূত হিংসার ঘটনা বেড়ে চলেছে বলে আক্ষেপ করেছেন তাঁরা। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে তাঁরা লিখেছেন, ‘‘দুঃখজনক ভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি এখন উস্কানিমূলক রণহুঙ্কার হয়ে উঠেছে। যার ফলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে। একাধিক গণহত্যাও ঘটছে। ধর্মের নামে এত হিংসা অবিশ্বাস্য! এটা মধ্যযুগ নয়! দেশের সংখ্যাগুরু সমাজের অনেকের কাছেই রামের নাম অতি পবিত্র। শীর্ষ স্তরের প্রশাসক হিসেবে, রামের নামে কালি ছিটানো প্রতিরোধের দায়টা কিন্তু আপনারই (প্রধানমন্ত্রীর)!”
ওই চিঠির পাল্টা হিসাবে কঙ্গনা রানাউত, মধুর ভাণ্ডারকর, বিবেক অগ্নিহোত্রী-সহ দেশের ৬১ জন বিশিষ্ট নাগরিকেরা সরব হন। একটি বিবৃতি জারি করে তাঁরা বলেছিলেন,“আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং সদর্থক জাতীয়তাবাদ ও মানবতাবাদের উপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী নিরলস সুশাসনের প্রচেষ্টাকে ভুল ভাবে তুলে ধরাই ওই চিঠির লক্ষ্য।” সুধীর তাঁর আবেদনে ওই ৬১ জনকে ‘সাক্ষী’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

সুত্র : আনন্দবাজার