1

বেলা শেষে ত্বকের যত্ন

অফিস শেষে ত্বকেও ক্লান্তি আসে। ধুলো-ময়লা তো জমেই। মেকআপের ঝক্কিও থাকে। অফিস থেকে ফেরার পর ত্বকের বিশেষ ও নিয়মিত যত্ন নেওয়া দরকার। কী করবেন জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ শোভন সাহা

বারবার মুখ ধোয়া : অফিসে একটানা কাজ থেকে কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে তিন-চারবার পানির ঝাপটা দিতে পারেন মুখত্বক জুড়ে। ক্লান্তি দূর হবে, অতিরিক্ত তেল থাকবে না। ফলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা ও শঙ্কা কমবে। তাই সকালে বের হওয়ার সময় পানিরোধী কাজল, আইলাইনার ও মাশকারা ব্যবহার করতে হবে। বাসায় ফিরে ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিতে হবে। অফিসে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে এবং অফিস থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে ফেলা জরুরি।

পরিমিত পানি পান : অধিকাংশ সময়েই দেখা যায়, কাজের চাপে থাকায় নিয়মিত পানি পান করতে ভুলে যান অনেকেই। অফিসের সময়টাতে পরিমিত পানি পান করা উচিত। কেননা পানির অভাব হলে সেটা ত্বকের ওপরে প্রভাব ফেলে। ত্বকে শুষ্কতাজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণের উপদ্রবও হতে পারে।

নিয়ম করে হাঁটা : কর্মজীবী নারীদের দিনের অধিকাংশ সময় কাটে চেয়ারেই। ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। তাই প্রতিদিন অফিসে যাওয়া কিংবা ফেরার সময়ে কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাস করলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে, মেদ কমবে এবং ত্বক ভালো থাকবে।

বাড়তি মেকআপ নয় : কর্মক্ষেত্রের মেকআপ হওয়া উচিত হালকা। তা ভারী হলে লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্রণের সমস্যা বাড়ে।

ফেসপ্যাক ব্যবহার : সপ্তাহে অন্তত তিন দিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফেসপ্যাক লাগিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। খুব সহজে ব্যবহার করা যায় মুলতানি মাটি, চন্দন কিংবা অ্যালোভেরার প্যাক। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগিয়ে ঘুমালে ত্বক আর্দ্র হয়।

চোখের যত্ন : কর্মক্ষেত্রে অনেকেরই কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ ধরে কাজ করতে হয়, ফলে চোখের ওপর চাপ বেশি পড়ে। ক্লান্তির ছাপও তাতে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাই নিয়মিত চোখের যত্ন নিতে হবে। অন্তত তিন দিন আলু বা শসা গোল করে কেটে চোখের ওপর দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।

শরতে ত্বকের যত্ন : আবহাওয়া এই ঋতুতে আর্দ্র থাকে বলে ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের দরকার নেই। এ সময় ত্বক প্রস্তুত হয় শীতের জন্য। তাই আর্দ্রতা ধরে রাখতে হবে। ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন ব্যবহারের মাধ্যমেই এটা সম্ভব।

তৈলাক্ত ত্বক : শুরুতেই প্রয়োজন তেল-ময়লা তুলে ফেলা। তাই প্রথমে তুলার সাহায্যে টোনার দিয়ে মুখ মুছে ফেলতে হবে। তেলমুক্ত ক্লিনজিং ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে মুখ ধুতে হবে। আলতো করে মুখ মুছে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।

মিশ্র ত্বক : সপ্তাহে দুই দিনই টোনার ব্যবহার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমে যাবে। ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে প্রথমে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এরপর হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মুখ মুছে নিতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকে কখনো হালকা গরম পানিও ব্যবহার করা যাবে না।

শুষ্ক ত্বক : এতে টোনারের প্রয়োজন নেই। প্রতিদিনের ব্যবহারের ক্লিনজিং ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ, ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। গাজর, কলা, সামান্য মসুর ডাল ও টক দই মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা চাই।

কেবল মুখের ত্বকের যত্ন নিলেই হবে না, শরীরের সব অংশের সমান যত্ন নিতে হবে। আবার অনেকে ত্বকের পরিচর্যা করলেও সেটি অব্যাহত রাখতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত উপকার পাওয়া যায় না। তাই এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।