1

বিচ্ছিন্ন কাশ্মীর, মৃত্যুর খবরও জানাতে পারছে না বাসিন্দারা

জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন ও রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর অঞ্চলটিকে কার্যত গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ভারতের বিজেপি সরকার। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে সেখানকার লোকজন কারও মৃত্যুর খবরও স্বজনদের জানাতে পারছে না।

এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলেন কাতার প্রবাসী কাশ্মীরি সুহেল আহমেদ। দাদুর মৃত্যুর ১৯ দিন পর জানতে পেরেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ও রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি সরকার। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পুনর্গঠন করা হয়।

এনিয়ে সেখানে নজিরবিহীন কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ল্যান্ডফোন, মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা। বন্ধ রয়েছে সেখানকার সংবাদমাধ্যমও। এতে কার্যত গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কাশ্মীর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময় জানায়, গত ১০ আগস্ট মারা যান সুহেলের দাদু। তার পরিবার থাকে কাশ্মীরের এইচএমটি শ্রীনগরে। বহু চেষ্টা করেও সুহেলকে এ খবর পৌঁছে দিতে পারেননি তারা।

বৃহস্পতিবার মিলে সেই সুযোগ। সুহেলের বাবা ফারহাত গিয়েছিলেন শ্রীনগরে ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিশনারের অফিসে। সেখান থেকে ছেলেকে ফোন করার সুযোগ পান। দুই মিনিট ছেলের সঙ্গে কথা বলার সময় ছলছল হয়ে ওঠে ফারহাতের চোখ।

তিনি ফোনে ছেলেকে বলেন, ‘আশা করি ভালো আছো। খারাপ খবর হলো তোমার দাদু আর আমাদের মধ্যে নেই। মৃত্যুর সময় তোমাকে খুঁজছিলেন।’

স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কমিশনারের অফিসে এসেছিলেন ফারহাত। দীর্ঘক্ষণ লাইন দেওয়ার পর ফোন করার সুযোগ পান।

ফারহাত বলেন, ‘দুঃসংবাদ পেয়ে ছেলে স্বাভাবিকভাবেই খুব মুষড়ে পড়েছে। যোগাযোগ করতে না পারায় এতদিন জানাতে পারিনি। ওর সঙ্গেও বহু দিন পর কথা হলো। আমাদের এখানে কিছু জায়গায় ল্যান্ডলাইন চালু হয়েছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল কল করার সুযোগ পাইনি। ১৯ দিন লেগে গেল!’

এদিকে শুক্রবার বেশ কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, বাইরে না বের হতে। বেশ কিছু জায়গায় ব্যারিকেড ফিরিয়ে আনা হয়। এই নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ হয়ে গেলেও কাশ্মীরের বড় মসজিদগুলোতে নামাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি।