1

বাম দলের ডাকা হরতালে বিএনপি’র নৈতিক সমর্থন

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা রোববারের অর্ধদিবস হরতাল কর্মসূচিতে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরও সিদ্ধান্ত হয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির নেতারা চাইলে অংশ নিতে পারবেন। তবে প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৪টা থেকে দুই ঘণ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে সংযুক্ত ছিলেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান আলোচনায় অংশ নেন।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে জানান, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে সারাদেশের মানুষের ক্ষতি হয়েছে। তাই যৌক্তিক প্রতিবাদের হরতালে নীতিগত সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিএনপি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আর কোনো কর্মসূচি দেবে কি-না– জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে তারা চিন্তা করছেন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা তুলে নেওয়া উচিত। দলীয় প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা এ দেশের উপযোগী নয়। এটা রাজনীতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ইচ্ছা করলে এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে বিএনপির দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

একাদশ নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত জাতীয় সংসদের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, এই নির্বাচন প্রহসন ছিল। প্রায় ২১৩টি কেন্দ্রে ১০০ ভাগ ভোট পড়েছে, ১৫০০টির ওপরে ভোট কেন্দ্রে ৯৫-৯৯ ভাগ ভোট পড়েছে। যেটা অসম্ভব ব্যাপার। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সেটা কখনোই সম্ভব নয়।

পাবনার আদালতের রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ২৪ বছর পরে নিম্ন আদালতে যে রায় দেওয়া হয়েছে, তাতে তারা উদ্বিগ্ন ও বিক্ষুব্ধ। এ ধরনের রায় নজিরবিহীন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতিহিংসাপরায়ণ। এ রায়ে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বরগুনায় রিফাত হত্যার পর নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারে হত্যার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রিফাত হত্যার পর যে ঘটনাটি ঘটে তাতে আইন-আদালত ও রাষ্ট্রের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ করা হয়েছে। নয়ন বন্ডকে হত্যা করে আসল মদদদাতাদের আড়াল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ৬ মাসে ৪৩৮ জনকে ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হতে হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই।