1

বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি

বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার প্রতিবাদে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সমাবেশ করেছে। বুধবার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ ড. এস এম রফিকুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। অধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবে না বলে ঘোষণা দেন তারা।

বুধবার দুপুরে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম রফিকুল ইসলাম তার কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আইসিটি’র দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কলেজের ছাত্রী ও অবিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তিনি ওই শিক্ষককে নোটিশ দেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন। এই নোটিশের খবর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে তারা অধ্যক্ষ দুর্নীতি ও এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এস এম রফিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি অভিযোগ ধামাচাপা দিতে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আইসিটি’র দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেইনি। ওই নোটিশ ভিত্তিহীন। কলেজে অধ্যক্ষ গত প্রায় চার বছর ধরে আছেন। তিনি সেচ্ছাচারী, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলে ক্ষুব্দ হন। তিনি এই কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকে ক্যাম্পাসের গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। পুকুরের মাছ ধরে নেন। কলেজে ভর্তির সময় আমরা পরিচয়পত্র, কলেজ বাসের ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে টাকা দেই। অথচ আমরা কলেজের কোন সুযোগ সুবিধা পাইনা। পরিচয়পত্র গ্রহণের সময় নতুন করে আবার টাকা দিতে হয়েছে। মাসে মাসে টাকা দিয়েও আমরা কলেজের বাসে উঠতে পারিনা। আমরা তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা তার অপসারণ চাই। তিনি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস বর্জন থাকবে বলেও হুশিয়ারি দেন তারা।

অভিযোগ ওঠা আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ সকালে কলেজের এসে দেখি আমাকে একটা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট। অবিভাবক বা শিক্ষার্থীরা আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়নি। অধ্যক্ষের দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় আমাকে হেয় করতে অধ্যক্ষ এই নোটিশ দিয়েছেন। তাই তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কোন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আর ক্লাসে যাবে না বলে হুশিয়ারি দেন ওই শিক্ষক।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় কোন কারন ছাড়াই আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানকে দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ দুর্নীতি ও এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার প্রতিবাদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সমাবেশ করা হয়েছে। অধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এস এম রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজের ছাত্রী ও অবিভাবকদের কাছ থেকে অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ পেয়ে আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যথাযথ কারণ দর্শাতে বলেছি। এই কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে ওই শিক্ষক কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে উস্কাচ্ছে। ওই শিক্ষকের প্ররোচনায় শিক্ষার্থীরা আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।