বাগেরহাট জেলা সদরসহ গ্রাম-গঞ্জ, হাটবাজারে অধিকাংশ মানুষ মানছেন না মরণঘাতী করোনার সংক্রমন রোধে সামাজিক দূরত্ব। গত দু‘দিনে দেশে রেকর্ড সংখ্যাক করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় আতংকিত সচেতন মহল জেলাকে লকডাউনের দাবী তুলছেন। জন প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সোমবার বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন দাবী তুলে স্টাটাস দিচ্ছেন।
সকাল থেকে জেলা সদরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে ব্যপক জনসমাগম দেখা গেছে। বিশেষ করে বাজারগুলোতে সামাজিক দুরত্ব তো দুরের কথা আগের মতই ভিড় রয়েছে। প্রতিদিন সকালে দেশের দক্ষিন অঞ্চলের অন্যতম সামুদ্রিক মাছের পাইকারী বাজার বাগেরহাটের কেবি বাজরে যেন সামাজিক দুরত্বের বিষয়টি কেউ জানে না। পূর্বের মতই সেখানে ভিড় দেখা যায়।
বাগেরহাট পৌরসভার কয়েকটি স্পটে ১০ টাকা কেজি দরে খোলাবাজারে চাল বিক্রির সময় অনেক স্থানেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়নি। ক্রেতারা একজনের সাথে একজন লম্বা লাইন দিয়ে দাড়িয়ে চাল নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এদিকে দুরপাল্লার ও অভ্যন্তরিন রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও অবাধে ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত রিক্সা-ভ্যান ও মাহিন্দ্র চলাচল করছে। সামাজিক দূরত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালকসহ ৩ জন যাত্রী নিয়ে ছুটে চলছে।
অপরদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাগেরহাটে বাড়িতে ফেরা ৪ হাজার ২২৯ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজারের অধিক প্রবাসীর হোম কোয়ারেন্টিনের করেনি। এই অবস্থান ৩ ফুটের সামাজিক দুরত্ব কর্মসূচি না মেনে লোকজন ঘর থেকে দল বেধে সড়কে চলাচল, বাজার করা ও আড্ডা দেয়ায় বাগেরহাটে করোনা ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
করোনা সংক্রমন রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে বাগেরহাটে এখনই লকডাউনের দাবী ক্রমেই জোরালে হচ্ছে। বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক সরদার নাসির উদ্দীন জেলাকে করোনা ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এই মুহুর্তে প্রবেশ দ্বার সীল করে দেয়ার দাবী জানান।
বাগেরহাট আন্ত:জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল বাকী তালুকদার বলেন, জেলার মানুষকে স্স্থ্যু রাখতে এখনই লকডাউন করে দেয়া উচিৎ। প্রবেশ দ্বার থেকে জরুরী খাদ্যও ঔষধ সরবরাহের গাড়ি ছাড়া অন্যকোন গাড়ি ঢুকতে দেয়া যাবে না।
বাগেরহাট প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাগেরাহাট ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক আহাদ উদ্দীন হায়দার বলেন, বাগেরহাট জেলাকে করোনার থাবা থেকে রক্ষার জন্য লকডাউন ঘোষনা করা এখন সময়ের দাবী।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রদীপ কুমার বকসীও এক স্টাটাসে লিখেছেন, লকডাউন বাগেরহাট সময়ের সব চেয়ে যৌক্তিক দাবী।
বিএমএ এর বাগেরহাট জেলার সাধারন সম্পাদক ডাঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, অবিলম্বে বাগেরহাটকে অন্য জেলা থেকে আলাদা করা উচিৎ। লকডাউনের এখনই করতে হবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ বলেন, সবাইকে ঘরে রাখতে অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লকডাউনের দাবি উঠতেই পারে। লকডাউনের সাথে অনেক বিষয় জড়িত। এখনও এধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সভাসহ নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে।