1

বাগেরহাটে অর্থপাচার মামলায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেটের এমডি মান্নান কারাগারে

বাগেরহাটে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদারকে ১১০ কোটি টাকা পাচারের মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার বিকেলে তিনি বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলক চন্দ্র বিশ^াসের আদালতে হাজির হয়ে আতœসমর্পণ করলে বিচারক দীর্ঘ শুনানী শেষে তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
এদিকে আদেশের পর এজলাস থেকে আসামী নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার বের হওয়ার পর যাতে সংবাদকর্মীরা তার ছবি ধারণ না করতে পারে সেজন্য তার আইনজীবীরা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখে আদালত থেকে তাকে নিচতলা পর্যন্ত পৌছে দেন। পরে তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে না তুলে তার ব্যক্তিগত গাড়ীতে জেলা কারাগার পর্যন্ত পৌছে দেয়া হয়।
গত ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দুদকের খুলনা জেলা সম্বন্নিত কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (এডি) মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের একটি মামলা করেন। নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় শহরের মিঠাপুকুরপাড়ে অবস্থিত।

দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জী বলেন, গত ৩০ মে বাগেরহাট শহরের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে। ওই মামলায় তিনি সোমবার আতœসমর্পণ করলে আদালতের বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি আব্দুল মান্নান তালুকদার নামে এক ব্যক্তি সেচ্ছায় অবসর নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েলস্টেট লিমিটেড নামে একটি জমি কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান করা হয় বাগেরহাট শহরের মিঠাপুকুরপাড় জামে মসজিদের ঈমাম আনিসুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তিকে। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পর তিনি গ্রাহকদের প্রতি লাখে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে মুনাফা দেয়ার প্রলোভনে বাগেরহাট, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার অন্তত ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ২৯৯ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। যা ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি। গত কয়েক বছরে বাগেরহাটের ১৬টি ব্যাংকের ৩০টি (একাউন্ট) হিসাব থেকে ১১০ কোটি ৩১ লাখ ৯১৩৫ টাকা ৫৮ পয়সা জমা করেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া এই বিপুল পরিমান অর্থ তিনি ব্যাংক থেকে তুলে পাচার করেছেন। এই টাকা কোথায় পাচার করা হয়েছে তা জানতে দুদক অনুসন্ধান চালাচ্ছে।