ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও সুযোগ পাওয়া বাগেরহাটের দরিদ্র মেধাবী জমজ দুই বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়ার পড়াশুনার দায়িত্ব নিলেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ। অর্থাভাবে মেধাবী এ মেয়ে দুটির লেখাপড়া হবেনা জানতে পেরে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারমান সরদার নাসির উদ্দিন ও জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশিদ ছুটে যান ওই বাড়িতে। দুই বোন ও তাদের মাকে শনিবার দুপুরে বাগেরহাট সার্কিটে হাউসে এনে জেলা প্রশাসক তাদের সাথে কথা বলেন। জেলা প্রশাসক মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থী ও তার মায়ের সাথে কথা বলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ লেখাপড়ার খরচ প্রদানের আশ্বাস দেন। এরপরপরই বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থীকে দুটি মুঠোফোন প্রদান করেন।
পরে বাগেরহাট পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান তাদের ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান সমাজে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষও সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। তাই তোমাদের লেখা পড়ার জন্য আমরা জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করব।
বাগেরহাট সদর উপজেলার হরিণখানার নির্মাণ শ্রমিক পিতা মহিদুল হাওলাদারের দুই জমজ মেয়ে সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়া। অর্থাভাবে টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন তারা। এরপরও মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে সুরাইয়া ৪. ৮৬, সুমাইয়া ৪.৯১ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দুই বোনই গোল্ডেন এ প্লাস পায়। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় গ-ইউনিটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ভর্তির শেষ দিন ৩১ অক্টোবর।
মা শাহিদা বেগম বলেন, অনেক অর্থ কষ্টে থাকার পরও মেয়েদের পড়াশুনা করিয়েছি। মেয়েরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। তাই এখন একটু ভারমুক্ত হয়েছি।
সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পরে এক ধরণের অনিশ্চয়তা কাজ করছিল মনের মধ্যে। জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়সহ অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সকলের কাছে দোয়া চাই। যাতে ভাল লেখা পড়া করে দেশের সেবা করতে পারি।