1

বসের যৌন হয়রানির কথা জানিয়ে কারাদণ্ড নারীর

বসের যৌন হয়রানির প্রমাণ তুলে ধরতে তার সঙ্গে ফোনের কথোপকথন রেকর্ড করে আদালতে উপস্থাপন করেন ইন্দোনেশিয়ার এক নারী। এই ‘অপরাধে’ তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। খবর বিবিসির।

রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদন গত বৃহস্পতিবার নাকচ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট জানান, বাইক নুরিল মাকনুন নামের ওই নারী অশ্লীল বিষয় ছড়ানোয় তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

নুরিলের আপিল নাকচ করে আদালতের দেওয়া রায়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

রেকর্ডিংটি ছড়িয়ে পড়লে নুরিলের বস ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।

ইন্দোনেশিয়ার লোমবোক দ্বীপের মাতারাকের শহরের একটি স্কুলে কাজ করতেন নুরিল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে যৌন হয়রানিমূলক ফোনকল পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

নুরিল যে ফোনালাপটি রেকর্ড করেন, সেখানে ওই প্রধান শিক্ষক যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করেন। রেকর্ডিংটি স্কুলের কর্মচারী এবং স্থানীয় শিক্ষা সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই রেকর্ডিং ছড়িয়ে পড়ার পর প্রধান শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। তবে তার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে তথ্য ও লেনদেন আইনে শ্লীলতা লঙ্ঘনের দায়ে গত নভেম্বর মাসে নুরিলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

নিজের পক্ষে নতুন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় নুরিলের আপিল বাতিল করা হয় বলে জানান আদালত।

আদালতের মুখপাত্র আবদুল্লাহ জানান, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় নুরিলের আপিল বাতিল করা হয়েছে। তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডসহ প্রায় ৩৫ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে।

তবে রেকর্ডিং ছড়ানোর পেছনে কোনো হাত নেই বলে দাবি করেছেন নুরিল। এক বন্ধু তার মুঠোফোন থেকে এটি সংগ্রহ করেছেন বলে জানান তিনি।

এ রায়ে ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ রায়ের ফলে হয়রানির শিকার নারীরা মুখ খুলতে ভয় পাবেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

এক সাক্ষাৎকারে লিগ্যালএইড ফাউন্ডেশন ফর দ্য প্রেসের প্রধান নির্বাহী আদে ওয়াহিউদিন বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে হয়রানির শিকার ব্যক্তিকেই সাজা দেওয়ার রাস্তা খুলে গেল।