1

ফেনী নদীর পানি দেয়ার কারণে কী ধরণের প্রভাব পড়বে

 

ফেনী নদী থেকে শুষ্ক মৌসুমে ভারত পানি প্রত্যাহার করলে তা ওই এলাকা এবং পরিবেশের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে মিশ্র মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ইনামুল হক বলেন, “ভারত যদি বেশি পরিমাণে পানি তুলে নেয় তাহলে মুহুরি সেচ প্রকল্প ও পরিবেশগত যে প্রকল্প আছে সেটার উপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ”।

নদী বিষয়ক সংগঠন রিভাইরাইন পিপল এর মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, “শুষ্ক মৌসুমে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে ভারত যদি ১.৮২ কিউসেক পানি তুলে নেয় তাহলে তা পরিবেশের উপর তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। কারণ ওই সময়ে ফেনী নদীতে এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ পানি থাকে।”

অর্থাৎ পানি তুলে নেয়ার পরও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকবে নদীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য।

পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত বলেন, এ পরিমাণ পানি তুলে নিলে আসলে তা পরিবেশ এবং আশপাশের বসতির উপর কোন প্রভাব ফেলবে না।

“বাংলাদেশের ভাটিতে এই নদীর উপর মুহুরি সেচ প্রকল্প আছে। আমি মনে করি না এই প্রায় দুই কিউসেক পানি উত্তোলন করলে তা পরিবেশের উপর কোন ধরণের প্রভাব ফেলবে,” তিনি বলেন।

মি. নিশাত বলেন, দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা দরকার। যাতে খাবার পানি, নৌ-চলাচল, সেচ এবং নদীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করে প্রতিবেশের জন্য পানি, মাছের জন্য পানি যাতে নিশ্চিত করা যায়, সে লক্ষ্যে দুই দেশ আরো ৬টি নদীকে একটা যৌথ ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে চাইছে।

এদিকে, ফেনী নদীর পানি উত্তোলন ছাড়াও আরেকটি বড় ইস্যু হচ্ছে এর পরিবেশ বিপর্যয়।

গবেষক মি রায়বর্ধন বলেন, ফেনী নদীর উৎসস্থল অর্থাৎ ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকায় গাছ কেটে বন-নিধন শুরু হওয়ার কারণে সেখানকার মাটিতে জলধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। যার কারণে কমেছে নদীর নাব্যতাও।

এসব কারণে নদীর গভীরতা কমে যাওয়া এমনকি এই অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় মানচিত্র থেকে ফেনী নদী মুছে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এ অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পেতে হলে উভয় দেশের সরকারকেই নদীর নাব্যতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন মি. রায়বর্ধন।