দিনে দিনে বাড়ছে জনসংখ্যা। বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। কমে যাচ্ছে বিশুদ্ধ পানির প্রাকৃতিক উৎস। এমন পরিস্থিতিতে ‘ভয়াবহ’ পানি সংকটের আশঙ্কায় আগে থেকেই সতর্ক হচ্ছে সিঙ্গাপুর। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে প্রতিদিন ৪৩০ মিলিয়ন গ্যালন পানি দরকার পড়ে। সামনের চার দশকে এই পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে!
খরচের এই হিসাব এশিয়ার শহরটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
৫ মিলিয়নের বেশি মানুষের বাসভূমি সিঙ্গাপুর ঝরনা দিয়ে বেষ্টিত হলেও বিশুদ্ধ পানির জন্য তাদের নিজস্ব তেমন কোনো উৎস নেই। তারা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানির উৎস ব্যবহার করে থাকে।
সিঙ্গাপুরের পানির সমস্যা মেটাতে কাজ করছে স্নাইডার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
‘আমরা নির্ভরযোগ্য পানি ব্যবহার করে আসছি, এটা দ্রুত পাল্টে যেতে পারে। তাই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আগে থেকে অবকাঠামো নিয়ে ভাবতে হবে,’ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষকেরা বলছে, ‘পানির স্বাধীনতার জন্য বিশাল প্রস্তুতি নিতে হবে। আর এ জন্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতার বিকল্প নেই।’
প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ছোট এবং কালো স্পঞ্জ জাতীয় কার্বন ফাইবার অ্যারোজেল তৈরি করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে অপচয় পানি বিশুদ্ধ করা যাবে।
উপাদানটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহার উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছে সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক স্টার্টআপ কোম্পানি ইকোওর্থ টেকনোলজি।
প্রতিষ্ঠানটির সিইও আন্দ্রে স্টল্টজ জানান, সিঙ্গাপুরের বর্জ্য পানির বাজারে তারাই প্রথম প্রবেশ করবেন। বৈশ্বিকভাবে যাতে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা যায় সেই চেষ্টাও তারা করছেন।
‘আমরা বিশ্বাস করি এই সম্ভাব্য প্রভাব বড় কিছু উপহার দেবে। মানুষের ব্যবহৃত পানিকে বিশুদ্ধতায় ভরে দিতে পারব আমরা।’
ওয়েটরোয়াম নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর ছাড়িয়ে অন্য দেশে তাদের আবিষ্কার পৌঁছে দিতে শুরু করেছে।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন তারা পাতলা এবং সহজে বহনযোগ্য একটি পরিস্রাবণ ডিভাইস তৈরি করেছেন। যেটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭৫ হাজার মানুষ পানি বিশুদ্ধকরণের কাজে ব্যবহার করছে।
এই ডিভাইসটি সাইকেল পাম্পের থেকে একটুও বড় নয়। একটি ডিভাইস দিয়ে দুই বছর পর্যন্ত কোনো গ্রামের ১০০ মানুষকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব।