মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন




প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯

একাত্তরের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রথম পর্বের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও (প্রথম পর্ব) প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয় বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.molwa.gov.bd  -এ তালিকা পাওয়া যাবে।

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আরিফ উর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘১৯৭১ সালের বিভিন্ন জেলার রেকর্ড রুম এবং ওই সময় বিজি প্রেসে ছাপানো তালিকাও সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে। যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। তালিকার প্রাথমিক খসড়া আজ প্রকাশ করা হলো। আগামী ২৬ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান তথ্যমতে কোনও কোনও তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৬ জন। এরমধ্যে দাবিদার মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ জন। বর্তমানে ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ১ হাজার ৪৬১ জন। কিন্তু এই ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ সংখ্যক তালিকার অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম একাধিক গেজেট বা দলিলে থাকায় বেশি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি নয়।’

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘একাধিক তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত একক তালিকা তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন। এই খসড়া তালিকা উপজেলা থেকে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে আগামী ২৬ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমরা রাজাকারদের যে তালিকা প্রকাশ করলাম তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে পাওয়া। এদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগামীতে এটি করা যাবে।’

এদের বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এদের নামে মামলা এবং তালিকা প্রকাশ এক বিষয় নয়। আমি জাতির কাছে ওয়াদা করেছিলাম যে, রাজাকারদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করবো। আমি তা শুরু করলাম মাত্র। এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে কিনা সেটি সরকারের বিষয়। কারণ, গেজেট প্রকাশ হতে হলে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন লাগে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এককভাবে গেজেট প্রকাশ করতে পারবে না।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমানের নাম এই তালিকায় নেই। কারণ, তারা রাজাকার, আল-শামসের চেয়েও উচ্চ পর্যায়ের স্বাধীনতাবিরোধী নেতা ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই শ্রেণির মানুষ ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। এক শ্রেণি ছিলেন যাদেরকে পাকিস্তানি বাহিনী ধরে নিয়ে সেখানে আটকে রেখেছিল। আরেক শ্রেণি ছিলেন যারা নিজেদের সুখ-শান্তি ও নিজেরদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া তাদেরই একজন। এই শ্রেণির লোকদের আমরা স্বাধীনতাবিরোধী বলে অবহিত করবো।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজাকারদের এই তালিকা নতুন কোনও তালিকা নয়। নতুনভাবে কাউকে তালিকা করতেও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ওই সময় ডিসি অফিসের রেকর্ড রুমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজি প্রেসের প্রকাশিত গেজেটে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের নামই এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছে। তবে এটি এখনও পরিপূর্ণ নয়। অনেক জেলার ডিসি জানিয়েছেন, তারা রেকর্ড রুমে এ ধরনের কোনও তথ্য পাননি। আমরা তাদেরকে আরও খোঁজাখুঁজি করার জন্য বলেছি। বহু বছরের পুরনো বলে পেতে হয়তো সময় লাগছে। আশা করছি, ২৬ মার্চের মধ্যেই এই তালিকা চূড়ান্ত করতে পারবো। এ নিয়ে ভীত হওয়ার কোনও কারণ নাই। যেকোনও সূত্র থেকে পাওয়া যেকোনও তথ্য সরকারের হাতে এলে যাচাই-বাছাই না করে কোনোভাবেই তা প্রকাশ করা হবে না।’

মন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমাদের একই কাজ করতে গিয়ে যদি ১০ জন অপরাধী ছাড়াও পেয়ে যায় তারপরেও একজনও নিরাপরাধ ব্যক্তি অভিযুক্ত হবেন না।’

তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

image_pdfimage_print




সংবাদটি ভাল লাগলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরো সংবাদ










© All rights reserved © 2019 notunbarta24.com
Developed by notunbarta24.Com
themebazarnotunbar8765